রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হওয়া জেটটি এক ইঞ্জিনবিশিষ্ট হালকা ওজনের যুদ্ধবিমান। বিমানটি তৈরি করা হয়েছে চীনের চেংডু এয়ারক্রাফট করপোরেশন (সিএসি)। অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য চীনে এটি জে-৭ নামে পরিচিত। তবে রপ্তানির সময় এর নামকরণ হয় এফ-৭।
বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বহরে শুরু থেকে এফ-৭ যুদ্ধবিমান যুক্ত করা হয়। আকাশ থেকে আকাশে যুদ্ধ, আকাশ থেকে ভূমিতে আক্রমণ এবং প্রশিক্ষণ ও টহলের জন্য এই যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়।
অ্যারো কর্নারের তথ্য অনুযায়ী, এফ-৭ যুদ্ধবিমান চীনের তৈরি এক ইঞ্জিন বিশিষ্ট হালকা ও গতিশীল ফাইটার জেট এবং এটি বিশ্বের বহু দেশের বিমানবাহিনীতে ব্যবহৃত হয়েছে।
চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্সের (পিএফএএএফ) প্রয়োজন মেটাতেই এফ-৭-এর ডিজাইন ও উন্নয়ন শুরু হয়।
২০১৩ সালের মে মাসে এফ-৭ এর উৎপাদন বন্ধ হয়। তবে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিশরসহ একাধিক দেশে এই যুদ্ধবিমান ব্যবহৃত হচ্ছে।
এয়ারোস্পেস গ্লোবাল নিউজ (এজিএন) বলছে, এই ধরনের জেট সারা বিশ্বেই আকাশ প্রতিরক্ষা, বহুমুখী অভিযান ও পাইলদের প্রশিক্ষণের জন্যও ব্যবহার হয়। তবে নতুন প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের চেয়ে এর দুর্ঘটনার হার বেশি। এর কারণ, পুরোনো নকশার এয়ারফ্রেম, সীমিত নিরাপত্তা, আধুনিক ফ্লাইট নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অভাব।
এফ-৭ বিজিআইতে আগের সংস্করণগুলোর তুলনায় ককপিটে অনেক আধুনিকায়ন করা হয়। দুটি মাল্টিফাংশন ডিসপ্লে (এএফডি) যুক্ত করা হয়। এতে রয়েছে এইচওটিএএস (Hands On Throttle And Stick) প্রযুক্তি, যা পাইলটকে যুদ্ধবিমান পরিচালনায় বাড়তি সুবিধা দেয়। নতুন এইচইউডি (Head-Up Display) যুক্ত হয়। পাইলটদের জন্য হেলমেট-মাউন্টেড সাইট (এইচএমএস) ও নাইট ভিশন সরঞ্জাম যোগ করা হয়েছে।
এ ছাড়া, এতে মুভিং ম্যাপ জিপিএস এবং ন্যাভিগেশন ও বোমার্ডমেন্ট সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পাইলটের সুরক্ষার জন্য ব্যবহৃত হয় মার্টিন বেকার এমকে.১০ ইজেকশন সিট, যা জরুরি মুহূর্তে দ্রুত নিরাপদভাবে পাইলটকে যুদ্ধবিমানের বাইরে নিয়ে যেতে সহায়তা করে।
এভিয়েশনভিত্তিক ওয়েবসাইটগুলোর তথ্য অনুযায়ী, এফ-৭ কম স্বয়ংক্রিয় যুদ্ধবিমান। তাই দ্রুত গতিতে এবং কম উচ্চতায় প্রশিক্ষণের সময় পাইলটদের বিশেষ মনোযোগের প্রয়োজন হয়।