ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় পদত্যাগ করেছেন। স্বাস্থ্যগত কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। চিঠি দিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে একথা জানিয়েছেন জগদীপ ধনখড়। খবর সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজারের।
পশ্চিমবঙ্গের সাবেক এই রাজ্যপাল রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যের কারণে চিকিৎসকদের পরামর্শেই উপরাষ্ট্রপতি পদ ছাড়ছেন তিনি। সেইসঙ্গে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং সংসদসদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ধনখড়।
তিনি জানান, তার মেয়াদকালে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা ও সমর্থন পেয়েছেন। দায়িত্বপালন করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছেন। ৭৪ বছর বয়সি ধনখড় আরো জানান, উপ-রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন তিনি ভারতের অসাধারণ অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং তাৎপর্যপূর্ণ উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছেন। এই উন্নয়নে যোগদান করতে পেরে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন বলে জানিয়েছেন ধনখড়।
২০২২ সালের অগস্টে উপ-রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্বগ্রহণ করেছিলেন ধনখড়। বিরোধী শিবিরের প্রার্থী মার্গারেট আলভাকে ৩৪৬ ভোটে হারিয়ে দেশের উপ-রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন তিনি। তবে বেশ কয়েক দিন ধরেই তিনি শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। চলতি বছরের মার্চে বুকে ব্যথা নিয়ে দিল্লির এমসে ভর্তি হয়েছিলেন। ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রেখে তার চিকিৎসা হয়েছিল।
ধনখড়ের আচমকা ইস্তফা দেওয়ায় গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। কারণ, সোমবারও রাজ্যসভায় অধিবেশন পরিচালনা করেন ধনখড়। রাতে পদত্যাগের কথা জানালেন তিনি।
১৯৭৮-৭৯ সালে রাজস্থানের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে স্নাতক উত্তীর্ণ হন ধনখড়। আইনজীবী হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। দীর্ঘ দিন রাজস্থানের হাইকোর্ট এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে ওকালতি করেছেন ধনখড়। ১৯৮৯ সালে রাজনীতিতে পা দেন। সেই বছর রাজস্থানের ঝুনঝুনু লোকসভা কেন্দ্র থেকে জনতা দলের প্রার্থী হয়ে লড়ে বিজয়ী হন। ১৯৯০ সালে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হন। পরে বিধানসভা নির্বাচনেও লড়ে জেতেন। ২০০৩ সালে বিজেপি যোগ দেন।
২০১৯ সালে ধনখড়কে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপাল করে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। তবে রাজ্যপাল থাকাকালীন পশ্চিবঙ্গের শাসকদল তৃণমূলের সঙ্গে প্রায়ই নানা কারণে সংঘাত বাধত তার। ধনখড়ের সময় রাজভবন এবং নবান্ন সংঘাত চরমে উঠেছিল। পরে তাকে উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করে কেন্দ্র। ২০২২ সাল থেকে সেই দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। সোমবার সেই পদ ছাড়লেন। এখন তার জায়গায় কাকে উপ-রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়, সেই নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে নানা মহলে।
আর