বাংলাদেশের থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ কমিয়ে ২০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির সঙ্গে চলমান তৃতীয় দফা বাণিজ্য সংলাপের প্রথম দিনেই বাংলাদেশ ইতিবাচক অগ্রগতির ইঙ্গিত পেয়েছিল। সবশেষ বাংলাদেশকে চিঠি দিয়ে ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্কের কথা জানিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। সে হিসাবে শুল্ক ১৫ শতাংশ কমিয়ে নতুন হার ঘোষণায় করা হয়েছে।
শুক্রবার শুল্ক নিয়ে হোয়াইট হাউসের এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানের ওপর ১৯ শতাংশ, আফগানিস্তানের ওপর ১৫ শতাংশ, ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ, ব্রাজিলের ওপর ১০ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মিয়ানমারের ওপর ৪০ শতাংশ, ফিলিপাইনের ওপর ১৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ওপর ২০ শতাংশ, ভিয়েতনামের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।
গত মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসি থেকে সাংবাদিকদের বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তরের (ইউএসটিআর) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক কমানো হবে।’

চলতি বছরের ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশসহ ৬০টি দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। যদিও ৯ এপ্রিল তা তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখা হয়, তবে স্থগিতাদেশ শেষ হওয়ার আগেই ৮ জুলাই নতুন ঘোষণা দিয়ে বলা হয়—বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হবে, যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।
বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিকৃত পণ্যে গড়ে সাড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক নেওয়া হতো। নতুন ব্যবস্থায় তা বেড়ে ২২–২৩ শতাংশ হয়েছে, আর পাল্টা শুল্ক কার্যকর হলে তা ৩৫ শতাংশে পৌঁছাবে—যা দেশের রপ্তানি খাতের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি কৌশলগত পদক্ষেপ নিয়েছে। গত ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে একটি বিস্তারিত অবস্থানপত্র পাঠানো হয়, যেখানে শুল্ক কমানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়।
প্রধান যুক্তি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি তুলনামূলকভাবে কম—প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার। এর বিপরীতে ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাটতি ১২৩ বিলিয়ন ডলার হলেও, তাদের জন্য পাল্টা শুল্ক হার ২০ শতাংশ নির্ধারিত হয়েছে। বাংলাদেশের দাবি, এত কম ঘাটতির পরও ৩৫ শতাংশ শুল্ক অন্যায্য।