রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই ধাপের সংলাপে চূড়ান্ত হওয়া সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। পাশাপাশি এ বিষয়ে তারা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করবে। গতকাল রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে কমিশনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
কমিশনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে তা নিয়ে কমিশন সভায় পর্যালোচনা করা হয়। এতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ঐকমত্য হওয়া প্রস্তাব বা সুপারিশগুলোর বিষয়ে কমিশন পর্যায়ক্রমে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করবে। সেই ধারাবাহিকতায় রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর সঙ্গেও কথা বলবেন তারা। এসব প্রস্তাব বা সুপারিশ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে কমিশন, রাজনৈতিক দল ও জোট এবং সরকারের করণীয় বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা তৈরির বিষয়েও সব দলকে সঙ্গে নিয়ে আবারও আলোচনায় বসবে। বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের পরামর্শ নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার রূপরেখা তৈরি করা হবে। বিশেষজ্ঞ নিয়ে আলোচনা আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবেও করা হতে পারে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
গত ৩১ জুলাই ৩০টি দল ও জোটের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ শেষ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর আগে গত ২৮ জুলাই দলগুলো জুলাই সনদের খসড়া পাঠানো হয়। তখন দলগুলোকে প্রাথমিক খসড়া বিষয়ে মতামত দিতে বলা হয়। যদিও বিএনপিসহ ১৫টির মতো রাজনৈতিক দল এখন পর্যন্ত মতামত জমা দিয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। তবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) আরো ১০টি দল তাদের মতামত এখনো জমা দেয়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিশন থেকে পাঠানো ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর প্রাথমিক খসড়ার ওপর অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও জোট মতামত দিয়েছে এবং যেসব দল এখনো সাড়া দেয়নি তাদের দ্রুত মতামত জানাতে তাগিদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সব দলের কাছ থেকে প্রাথমিক খসড়ার বিষয়ে মতামত পাওয়ার পরই তা পর্যালোচনা করে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে ঐকমত্য হওয়া প্রস্তাবগুলো যুক্ত করে চূড়ান্ত খসড়া দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আমার দেশকে বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় দফার আলোচনার চূড়ান্ত খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠাব। তাদের মতামত পাওয়ার পর জুলাই সনদ চূড়ান্ত করা হবে।
তারপর সেটা স্বাক্ষরিত হবে।’ কবে নাগাদ জুলাই সনদ হতে পারে জানতে চাইল আলী রীয়াজ বলেন, ‘চূড়ান্ত পর্যায়ের কিছু কাজ তো আমাদের করতে হবে। আমাদের হাতে ১০-১২ দিন সময় রয়েছে। দেখি এর মধ্যে কতটা সম্ভব হয়।’ সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সনদ স্বাক্ষরের পর এ আলোচনা হবে। তবে এখানে খুব দীর্ঘ আলোচনার প্রয়োজন হবে বলে মনে হয় না।