ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ, নান্দাইল, গফরগাঁও ও ভালুকায় বাড়ছে নির্বাচনী উত্তাপ। দীর্ঘ সময় পর প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ ফিরে আসায় সারাদিন জুড়ে সভা-সমাবেশ, মিছিল ও গণসংযোগে জমে উঠছে রাজনৈতিক অঙ্গন। তবে মাঠে সক্রিয়তার চেয়ে বিএনপির নেতারা বেশি ব্যস্ত রয়েছেন হাইকমান্ডে লবিং ও মনোনয়ন দৌড়ে। অভ্যন্তরীণ কোন্দলও তাদের প্রচারণায় কিছুটা প্রভাব ফেলছে।
অপরদিকে জামায়াতে ইসলামী আগেভাগেই প্রার্থী চূড়ান্ত করায় নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছেন। ডোর-টু-ডোর প্রচারণা ও ভোটার যোগাযোগে তারা বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন। ইসলামী আন্দোলন, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ অন্যান্য দলও কর্মসূচি ও প্রচারণায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ)
এ আসনে বিএনপির ভেতরে আলোচনায় রয়েছেন উপজেলা আহ্বায়ক প্রকৌশলী লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু ও সাবেক এমপি শাহ নুরুল কবীর শাহীন। বাবু তরুণদের সক্রিয়তা ও স্থানীয় উন্নয়ন উদ্যোগের কারণে জনপ্রিয়তা পাচ্ছেন। অন্যদিকে শাহীন পুরোনো পরিচিতি কাজে লাগালেও দলের দুর্দিনে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ তাকে চাপে ফেলেছে।
জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা মঞ্জুরুল হক হাসান। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও এনসিপির স্থানীয় নেতারাও প্রার্থী হয়েছেন।
ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল)
এ আসনে বিএনপির পাঁচজন নেতার মনোনয়ন দৌড় প্রতিযোগিতামূলক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ইয়াসের খান চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. শামসুল ইসলাম, নাসের খান চৌধুরী, মামুন বিন আবদুল মান্নান ও মেজর জেনারেল (অব.) আনোয়ারুল মোমেন মাঠে সক্রিয়। শেষ পর্যন্ত একক প্রার্থী নির্ধারণই বিএনপির বড় চ্যালেঞ্জ।
জামায়াত এখানে প্রার্থী দেয়নি, বরং আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম চানকে সমর্থন দিয়েছে। এছাড়া এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরাও মাঠে রয়েছেন।
ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও)
ধানের শীষের মনোনয়ন পেতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপির ছয়জন নেতা। তাদের মধ্যে সাবেক ছাত্রনেতা আলমগীর মাহমুদ আলম ও অ্যাডভোকেট আল ফাতাহ্ খান বিশেষভাবে আলোচনায়।
জামায়াত উপজেলা আমির ইসমাইল হোসেনকে প্রার্থী করেছে। তিনি ইউনিয়নভিত্তিক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা)
শিল্পাঞ্চলভিত্তিক এ আসনে শ্রমিক ভোটাররা প্রভাবশালী। এখানে বিএনপির তিন নেতা—ফখরউদ্দিন আহাম্মেদ বাচ্চু, মুহাম্মদ মুর্শেদ আলম ও অ্যাডভোকেট আনোয়ার আজিজ টুটুল—মনোনয়ন প্রত্যাশী।
তবে প্রচারণায় এগিয়ে আছে জামায়াত। উপজেলা আমির ছাইফ উল্লাহ পাঠান দিন-রাত ডোর-টু-ডোর প্রচার চালাচ্ছেন। ‘সুশাসন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কর্মসংস্থান’ ইস্যুতে ভোটার টানার চেষ্টা করছেন তিনি।
এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থী ডা. জাহিদুল ইসলামও শ্রমিক ও গ্রামীণ ভোটারদের মাঝে সক্রিয়।
স্থানীয় ভোটাররা বলছেন, প্রার্থীর দল নয়, বরং তাদের কাজের প্রতিশ্রুতি ও বিশ্বাসযোগ্যতাই হবে ভোট দেওয়ার মূল ভিত্তি।