ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বলেছেন, আধিপত্যবাদী ভারত ও তাদের দেশ-বিদেশের সেবাদাসরা আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ক্রমাগত নির্লজ্জ মিথ্যাচার অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।
এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আযমী বলেন, তাদের এসব নির্লজ্জ মিথ্যা প্রচারণা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার পরিবর্তে নীতিবিবর্জিত ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ঠাণ্ডা মাথায় হলুদ সাংবাদিকতা ও তাদের বিকৃত মানসিকতার প্রতিফলন। বাংলাদেশি এসব তথাকথিত সাংবাদিক যে ভারতের এবং বিগত ফ্যাসিবাদের দোসর তা দেশবাসী ভালো করেই জানে। জেন-জি’কে আর বোকা বানানো যাবে না। আপনাদের প্রভুদের দেশবাসী ঝাটাপেটা করে বিদায় করেছে তা ভুলে যাবেন না।
তিনি আরও বলেন, এবারে ভারতের পাকিস্তানি এজেন্ট তাবাসসুম মোয়াজ্জেম খান সম্পর্কে— দি ক্যাচলাইনে তার প্রতিবেদনটি কতটা পাগলের প্রলাপ তা প্রকাশের কোনো ভাষা নেই। আমি এ দেশে জন্মগ্রহণ করে এ দেশে বড় হয়েছি। এ দেশে লেখাপড়া করে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করি। ১৯৮১ সাল রেকর্ড ফল অর্জন করে কমিশন লাভ করি, যা আজ পর্যন্ত কেউ ভাঙতে পারেনি। প্রায় ৩০ বছর একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক হিসেবে পেশাদারত্বের উৎকৃষ্ট নমুনা দেখিয়ে সবার সামনে আদর্শ স্থাপন করতে পেরেছি। দেশসেবায় নিজেকে উজাড় করে দিয়ে সব অফিসারের নিকট অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা অর্জন করেছি। সেই সাথে উন্নত নৈতিক গুণাবলীরও দৃষ্টান্ত স্থাপন করে এসেছি। সেনাবাহিনীতে আমার অবস্থান সর্বজনবিদিত, যা এসব অন্ধ ও কালা ছাড়া কারও অজানা থাকার কথা নয়।
সাবেক এ সেনা কর্মকর্তা বলেন, আমি সবাইকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি— আমার জীবনে কখনো আমার কোনো কথা, কাজ বা আচরণে অণু পরিমাণ ‘পাকপ্রেমী’র কোনো নজির কেউ দেখাতে পারবে না। এ দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষায় নিজের জীবনের ঝুঁকি নিতে আমি সামান্যতম কুণ্ঠিত ছিলাম না। বিগত ৫৪ বছরে বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি, দল, গোষ্ঠী বা গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিগত ৪৫ বছরে সেনাবাহিনীর কোনো সেনাপ্রধান, কোনো জেনারেল, কোনো অফিসার বা সদস্য আমার মাঝে সামান্যতম ‘পাকপ্রেম’ দেখতে পেল না! আর ৫৪ বছর পর পাকিস্তানি এ নারী এবং তারই মতো এ দেশে ‘র’ এর মাস্টাররোলের একশ্রেণির সাংবাদিক নামধারী কুলাঙ্গার হঠাৎ করে ‘র’ এর ‘খোয়াবনামা’ থেকে এই তত্ত্ব আবিষ্কার করে আমার মতো এক দেশপ্রেমিকের বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি এসব মিথ্যাবাদীর কাছে জানতে চাই— স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এই তত্ত্ব তারা কোথায় পেল? প্রতিবেদনে এবং ইউটিউবে ‘বয়ান’ দিলেই কি মিথ্যাকে সত্যতে পরিণত করা যায়? কেবল গলাবাজি ছাড়া আমার ব্যাপারে তাদের অভিযোগসমূহ সম্পর্কে সামান্যতম একটা উদাহরণও তো এই বেহায়ারা দিতে পারেনি! ফ্যাসিবাদের দোসররা তো ‘গোয়েবলসের থিওরি’ দিয়ে আজীবন মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করার চেষ্টা করেই আসছিল। এর সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে পাকিস্তানি নারী। ‘সব শিয়ালের এক রা’ বলা ছাড়া ওদের এই নির্লজ্জ মিথ্যাচার সম্পর্কে আর কিছু বলার নেই।
আযমী বলেন, আমি দৃঢ় কণ্ঠে বলতে চাই– তাবাসসুম মোয়াজ্জেম খান, মনজুরুল আলম পান্না, সাজ্জাদ কাদির, নবনীতা চৌধুরী, আতিক রহমান, তৌফিক মারুফসহ আরও যারা আমার বিরুদ্ধে এ যাবত যা যা বলছে সেসব মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তারা বিদেশি প্রভুদের অর্থে লালিত-পালিত এবং কেবল প্রভুদের খুশি করার লক্ষ্যেই আমার মতো একজন দেশপ্রেমিকের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর তারা এসব তত্ত্ব নতুন আবিষ্কার করছে। ওদের নির্লজ্জ মিথ্যাচার সম্পর্কে কথা বলতেও লজ্জা হয়। রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ বিদেশি প্রভুর অর্থ খেয়ে বিবেক বিসর্জন দিয়ে দেশের বিরুদ্ধে কত ন্যক্কারজনক কাজ করতে পারে, এই এজেন্টদের না দেখলে তা কল্পনা করাও সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ওরা সাংবাদিক নামের কলঙ্ক। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা কি তাই তারাই জানে না। বিদেশি পত্রিকার খবরের সত্যতা যাচাই না করে ‘এ রিপোর্ট কতখানি সত্য’, ‘যদি সত্য হয়েও থাকে’, ‘আমরা পুরোপুরি সত্য হিসেবে সম্পূর্ণটা হয়তো গ্রহণ করছি না’ বলার দ্বারাই প্রমাণিত হয়ে যায় তাদের সব বক্তব্যই কল্পকাহিবিন। এটা বুঝার জন্য কোনো অতিরিক্ত মেধার প্রয়োজন হয় না। এই পেশায় নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আয়-রোজগার করতে না পারলে অন্য কোনো পেশায় সন্মানজনকভাবে আয়-রোজগারের ব্যবস্থা করার জন্য তাদের পরামর্শ দিচ্ছি। মহান সাংবাদিকতা পেশাকে কলঙ্কিত না করাই কাম্য।
তিনি আরও বলেন, ওদের এই অপচেষ্টার উদ্দেশ্য হলো— সেনাবাহিনীর মাঝে অস্থিরতা সৃষ্টি করা, আমাকে হয়রানি করা, আমার ব্যাপারে জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে করে বিদেশি প্রভুদের ফায়দা হাসিল করার এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। এ ছাড়া আমার নামে কিছু বলে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ‘ভিউ’ বাড়ানোর মাধ্যমে ‘অর্থিক লাভ’ করার জন্যও তারা ন্যক্কারজনকভাবে এ ধরনের মিথ্যা প্রচার করছে বলে ধারণা করা যায়।
সংশ্লিষ্ট সবার উদ্দেশ্যে বলছি— নির্লজ্জের মতো অনেক মিথ্যাচার করেছেন। আত্মসন্মানবোধ থাকলে আর চেঁচামেচি (কটু ভাষা ব্যবহার করলাম না) করবেন না। নিজের প্রতি দয়া করুন – হ্যাভ সাম মার্সি অন ইউ।