বিচারপতি এ এফ এম আব্দুর রহমান বলেছেন, বর্তমান নির্বাচনের প্রচলিত পদ্ধতিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই ভবিষ্যতের সকল নির্বাচনে জনমতের পূর্ণ প্রতিফলন ঘটানোর জন্য প্রাতিনিধিক রপ্তানি (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন অপরিহার্য।
মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ‘জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিচারপতি আব্দুর রহমান বলেন, অতীত অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে, প্রচলিত পদ্ধতিতে নির্বাচন কখনও গ্রহণযোগ্য বা নিরপেক্ষ করা সম্ভব হয়নি। এ পদ্ধতি ভোটারের মতামতের যথাযথ প্রতিফলন ঘটায় না এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনও নিশ্চিত করতে ব্যর্থ। কারণ প্রার্থীরা বিজয় নিশ্চিত করতে পেশীশক্তি বা অবৈধ প্রভাব ব্যবহার করে, মনোনয়ন বাণিজ্যে লিপ্ত হন এবং অল্পের ব্যবধানে হারের ক্ষেত্রে ভোটের মূল্যায়ন হয় না। এছাড়া প্রচলিত পদ্ধতিতে ক্ষমতাসীনদের স্বৈরাচারী হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। তাই প্রকৃত গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্য পিআর পদ্ধতির নির্বাচন একমাত্র সমাধান। তিনি নির্বাচন কমিশনকে আরপিও সংশোধনের মাধ্যমে নতুন পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানান।
প্রধান আলোচক সেলিম উদ্দিন বলেন, জুলাই বিপ্লব আমাদের জাতীয় জীবনের একটি বড় অর্জন। এই ঐতিহাসিক অর্জনকে স্মরণীয় রাখতে বিপ্লবীদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া ও জাতীয় বীর হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। দ্রুত জুলাই সনদ ঘোষণা করে এটিকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিয়ে ভবিষ্যতের নির্বাচন পরিচালনা করা জরুরি।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আব্দুর রব বলেন, পিআর পদ্ধতি বিশ্বের অনেক দেশে কার্যকর রয়েছে এবং এটি অধিকতর গ্রহণযোগ্য। তাই ভবিষ্যতে নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটাতে পিআর পদ্ধতি যৌক্তিক ও বৈজ্ঞানিক।
সেমিনারটি মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আব্দুর রবের সভাপতিত্বে এবং পরিকল্পনাবিদ মোঃ সিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিএসপিএস-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. মো. মিজানুর রহমান। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ, মেজর (অব.) ড. মোহাম্মদ ইউনুস আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মাদ রুহুল আমিন, ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের নায়েবে আমির আ. রহমান মূসা, ডা. আসাদুজ্জামান কাবুল, লে. কর্ণেল (বরখাস্ত) হাসিনুর রহমান, বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির চেয়ারম্যান কর্ণেল (অব.) আবু ইউসুফ যোবায়ের উল্লাহ পিএসসি, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এটিএম জিয়াউল হাসান, ইঞ্জিনিয়ার কাজী আবিদ হাসান সিদ্দিক, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মাদ হাসান নাসির, সাবেক সচিব শেখ এ কে মোতাহার হোসেন এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর আব্দুল লতিফ মাসুম প্রমুখ।