গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপের কমান্ডার, সাবেক মন্ত্রী এবং অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকা ১৯৯৯ সালের ৯ই নভেম্বর আওয়ামী পুলিশের গুলিতে রক্তাক্ত হন। সে সময়কার দৈনিক ইত্তেফাক ও দৈনিক সংবাদ–এর পাতায় প্রকাশিত ছবিগুলোতে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধের এই বীর সন্তানকে গুরুতর আহত অবস্থায় বহন করা হচ্ছে।
তবে এটাই খোকার ওপর শেষ আঘাত ছিল না। ২০১১ সালে ছাত্রলীগের হাতে আবারও রক্তাক্ত হন তিনি। অথচ সে সময় সংসদে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা অশ্লীল ভঙ্গিতে খোকার রক্তাক্ত দেহকে ব্যঙ্গ করে বলেছিলেন—“গরুর রক্ত মেখে নাটক করছে খোকা।” এই বক্তব্যে ক্ষোভে ফুঁসে উঠলেও মুক্তিযোদ্ধার পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি মুক্তিযুদ্ধ ব্যবসায়ী আওয়ামী চেতনাবাজদের।
গরুর রক্ত মেখে নাটক করছে খোকা – শেখ হাসিনা
এই বীর মুক্তিযোদ্ধা শেষ জীবন ক্যান্সারের যন্ত্রণায় কাটিয়েছেন জেলে বন্দি অবস্থায়। এমনকি মৃত্যুর আগ মুহূর্তেও দেশে এসে শেষ নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ পাননি। আজ প্রশ্ন জাগে—তখন কয়জন বিবৃতি দিয়েছিলেন? একজন মুক্তিযোদ্ধার রক্ত ঝরলেও কতজন কষ্ট পেয়েছিলেন? তখন কি মুক্তিযুদ্ধের অবমাননা হয়নি?
সমালোচকরা বলছেন, এই বাংলাদেশে স্বাধীনতার ঘোষককে রাজাকার বলা হয়েছে, তাঁর স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে, নোংরা ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে। তখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কোনো কথা শোনা যায়নি। অথচ লতিফ সিদ্দিকীর মতো বিতর্কিত রাজনীতিবিদের সমালোচনায় ‘৭১ হার্ট’ হয়ে যায়, কিন্তু সাদেক হোসেন খোকার রক্ত ঝরলেও চেতনা অক্ষত থাকে!
বিশ্লেষকরা মনে করেন, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের সবার, কোনো দলের একচেটিয়া সম্পদ নয়। যারা মুক্তিযুদ্ধের নাম ব্যবহার করে দুর্নীতিবাজ, ফ্যাসিস্টদের জন্য দরদ দেখায় অথচ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার রক্তকে হালাল করে দেয়, তাদের চেতনা মুক্তিযুদ্ধের নয়—বরং আওয়ামী চেতনা।