২০০১ সালের অক্টোবরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে দখল নেয় ছাত্রদল। শামসুন্নাহার হলও তার ব্যতিক্রম ছিল না। ছাত্রত্ব শেষ হওয়া ছাত্রদল নেত্রী লুসি, শান্তা, শেলী ও লিলি জোরপূর্বক হলে অবস্থান শুরু করেন এবং ছাত্রীদের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সাধারণ ছাত্রীদের পক্ষে দাঁড়ান প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সুলতানা শফি।
২২ জুলাই ২০০২ সালে সাধারণ ছাত্রীরা প্রাধ্যক্ষের পক্ষে মানববন্ধন করে। এর জেরে ২৩ জুলাই রাত ১টার পর নজিরবিহীন এক ঘটনায় পুলিশের পুরুষ সদস্যরা শামসুন্নাহার হলে প্রবেশ করে শত শত সাধারণ ছাত্রীকে লাঠিপেটা, অপমান ও গ্রেফতার করে। এ হামলার নেতৃত্ব দেন তৎকালীন এডিসি আব্দুর রহীম। পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদলের নেতারাও নির্যাতনে অংশ নেয়।
এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ছাত্রদল ছাড়া সব ছাত্রসংগঠন আন্দোলনে নামে। টানা কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ, অনশন ও প্রতিবাদ চলতে থাকে। পুলিশ টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেট ও লাঠিচার্জ চালায়। ৩০ জুলাই ও ২৯ জুলাইয়ের হামলায় বহু ছাত্র, শিক্ষক ও সাংবাদিক আহত হন।
অবশেষে তীব্র আন্দোলনের মুখে ১ আগস্ট তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে ডেকে নেওয়ার পর পদত্যাগে বাধ্য হন।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, শামসুন্নাহার হলের ২৩ জুলাইয়ের ঘটনাটি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ছাত্রদলের দখলদারিত্ব, পুলিশের বর্বরতা এবং প্রশাসনের ব্যর্থতার এক কালো অধ্যায়।