সাম্প্রতিক আফগানিস্তানের ভয়াবহ ভূমিকম্পে নারীদের উদ্ধারকাজে পুরুষদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে—এমন খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হয়েছে। কিন্তু এসব খবরের পেছনে নির্ভরযোগ্য কোনো সোর্স বা ডাটা নেই। মূলত আফগানিস্তানে নারীদের উপর বিদ্যমান বিধিনিষেধ নিয়ে আগে থেকে তৈরি পারসেপশনকে সামনে এনে এই সংবাদগুলো তৈরি করা হয়েছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, একজন প্রত্যক্ষদর্শী নাকি বলেছেন—পুরুষ উদ্ধারকারীরা শুধু পুরুষদের উদ্ধার করছে, নারীদের নয়। অথচ একজনের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পুরো ভূমিকম্প এলাকার চিত্রকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যেন সর্বত্রই একই অবস্থা। বাস্তবে হয়তো অনেক পুরুষ নারীদের উদ্ধার করেননি, তবে অনেকেই করেছেন—এ কথাও সেই যুক্তি থেকে উঠে আসে।
অন্যদিকে, রেডিও ফ্রি ইউরোপ দাবি করেছে, হাসপাতালে আহতদের যে সব ছবি প্রচারিত হয়েছে, সেগুলোতে নারী দেখা যায়নি। তাই তাদের ধারণা, নারীদের উদ্ধার করা হচ্ছে না। অথচ আফগান সরকার আহত নারীদের ছবি তোলা ও প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাহলে শুধু ছবিতে নারী নেই বলে নারীদের উদ্ধার হচ্ছে না—এমন সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
তবে একটি সত্য তথ্য হলো—ভূমিকম্পে আহত অনেক প্রসূতি মা পুরুষ ডাক্তারদের সামনে সন্তান প্রসব করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন অথবা পুরুষ ডাক্তাররা চিকিৎসা দিতে দ্বিধা করেছেন। এ ধরনের ঘটনা শুধু আফগানিস্তানেই নয়, বাংলাদেশ ও তুরস্কসহ অনেক দেশেই ঘটে থাকে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশেষ করে পশ্চিমা নারীবাদী সংগঠন ও জাতিসংঘের নারী অধিকার সংস্থা এসব বিষয়ে সমালোচনা করছে। তবে নির্দিষ্ট ডাটা বা একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র ছাড়া শুধুমাত্র অনুমান বা পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিকোণ থেকে খবর প্রকাশকে তথ্যবিকৃতি বলেই আখ্যায়িত করা হচ্ছে।