জাহাঙ্গীরনগর কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের আগের রাতে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট বক্স বিতরণের সময় ছাত্রদল নেতাকে দেখা গেছে। এসময় সাংবাদিক ভিডিও করতে গেলে ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ডিলিট করে দেন শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান রোজেন।
ভুক্তোভূগী সাংবাদিকের হলেন ওসমান সরদার দৈনিক যায়যায়দিনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী জানান, রাতে তথ্য সংগ্রহে ওই সাংবাদিক নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে যান। এসময় তিনি দেখতে পান ব্যালট বাক্স নিয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয় থেকে কর্মকর্তারা বের হচ্ছেন। তাদের পিছনে পিছনে যাচ্ছিলেন ছাত্রদলের ওই দুই নেতাসহ আরও কয়েকজন। এসময় এ দৃশ্যটি মুঠোফোনে ধারণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ওই সাংবাদিক। এ ঘটনা নজরে এলে ছাত্রদল নেতা মশিউর রহমান রোজেন ওই সাংবাদিকের মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিওটি ডিলিট করেন। পরবর্তীতে সাংবাদিক পরিচয় দিলে এমন ভিডিও ধারণ করতে নিষেধ করেন তিনি।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক ওসমান সরদার বলেন, ওই সময় আমি ব্যালট বক্স নিয়ে যাওয়ার ভিডিও করছিলাম। পেছনে ছাত্রদলের বাবর ভাই ও রোজেন ছিল। পরে রোজেন আমার কাছ থেকে ফোনটা নিয়ে, আমার ফোন থেকে ভিডিও ডিলিট করে দেয়। এটা নিয়ে আমি খুবই শঙ্কিত। আজই যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে আগামীকাল নির্বাচনের দিন কি অবস্থা হতে পারে?”
এ বিষয়ে জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবরকে ফোন করা হলে তিনি এমন ঘটনা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি তো ওইখানেই ছিলাম। ভিডিও ডিলিট করে নাই। কি ভিডিও ডিলিট করছে সেটাও তো জানি না। ভিডিও কোনো ডিলিট করে নাই। বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো।
জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৯ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. এ বি এম আজিজুর রহমান সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়, ১০ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবাসিক হল ও ক্যাম্পাসে সাবেক শিক্ষার্থী, অতিথিসহ যেকোনো ধরনের বহিরাগত ব্যক্তি অবস্থান করতে পারবেন না।
জাবি ছাত্রদল আহ্বান জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ তম আবর্তনের (২০০৯-১০) রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান রোজেন ৪০ তম আবর্তনের (২০১০-১১) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী। তারা দুজনেই ক্যাম্পাসের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। জাবি প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, তারা দুজনই নির্বাচন চলাকালীন সময়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পারবেন না।