আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সাহেল অঞ্চলের তিন দেশ—মালি, নাইজার ও বুরকিনা ফাসো। তারা অভিযোগ করেছে, আইসিসি আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলোর ক্ষেত্রে পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিকল্প হিসেবে এই দেশগুলো একটি আঞ্চলিক আদালত গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার নাম হবে সাহেল ক্রিমিনাল কোর্ট ফর হিউম্যান রাইটস (Sahel Criminal Court for Human Rights – SCCHR)।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
AES (Alliance of Sahel States) জোটভুক্ত দেশগুলোর নেতারা জানিয়েছেন—
আইসিসি মূলত আফ্রিকান দেশগুলোকেই টার্গেট করছে এবং পশ্চিমা শক্তির রাজনৈতিক স্বার্থ বাস্তবায়নে কাজ করছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বহু গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় নীরব থেকেছে।
রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করে আইসিসি একতরফাভাবে আফ্রিকান নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করছে।
নতুন আঞ্চলিক আদালতের উদ্দেশ্য
তিন দেশের অভিন্ন ঘোষণায় বলা হয়েছে, সাহেল ক্রিমিনাল কোর্ট ফর হিউম্যান রাইটস গঠনের মূল উদ্দেশ্য হবে—
১. মানবাধিকার সুরক্ষা ও অপরাধবিষয়ক বিচার স্থানীয় পর্যায়ে কার্যকরভাবে সম্পন্ন করা।
২. যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা ইত্যাদি বিষয়ে স্বাধীনভাবে বিচার করা।
৩. আফ্রিকান প্রেক্ষাপটে উপযোগী একটি বিকল্প আন্তর্জাতিক বিচার কাঠামো তৈরি করা।
৪. সাহেল অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ, চোরাচালান ও বহিঃশক্তির হস্তক্ষেপ মোকাবিলা করা।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আইসিসি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক রাজনীতিতে বড় ধরনের আলোড়ন তুলতে পারে। এর আগে আফ্রিকার আরও কয়েকটি দেশ আইসিসি ত্যাগের হুমকি দিলেও বাস্তবে পুরোপুরি বের হয়নি। তবে মালি, নাইজার ও বুরকিনা ফাসোর এই পদক্ষেপ আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মানবাধিকারকর্মীদের একাংশ বলছেন, আঞ্চলিক আদালত গঠন ইতিবাচক হলেও তার নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা জরুরি। অন্যদিকে, স্থানীয় পর্যায়ে এই পদক্ষেপ জনগণের কাছে আরও গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে ধারণা করছেন পর্যবেক্ষকরা।