বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিমকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। নিজেকে সিআইএর দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক পরিচয় দেওয়া এবং ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এজেন্ট হিসেবে সন্দেহের ভিত্তিতে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে তার জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, এনায়েত দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে আসছিলেন। ২০১৪ সালে বিএনপি ভাঙার জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ করার কথাও তিনি স্বীকার করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ও পেশাজীবীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এনায়েত দাবি করেছেন, তিনি জাতীয় ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অন্তত ১৪ জন নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখতেন। তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, তিনি খুব ধূর্ত প্রকৃতির লোক এবং সরাসরি প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাচ্ছেন।
এনায়েত দাবি করেছেন, তার সঙ্গে ১৪ জন নেতার সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে। তিনি তাদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখতেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম, ডিজিএফআই-এর সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) তাবরেজ শামস, সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) সাইফুল আলম, সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারি, জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জাতীয় পার্টির নেতা কাজী মামুনুর রশীদ, বিএনপির সাবেক অফিস সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিক উলফাত, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ ও সাখাওয়াত হোসেন বকুল। এই ১৪ জনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে তিনি দাবি করেছেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময় এই ব্যক্তিদের সঙ্গে অর্থ লেনদেন করছেন এবং তৃতীয় ব্যক্তির হাতে কাজ বাস্তবায়নের জন্য পৌঁছে দিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, এনায়েত প্রতারণার টাকাগুলো কোনো ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেন না করে সহযোগীদের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে স্থানান্তর করতেন। তার সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন গোলাম আজাদ মোস্তফা নামের এক ব্যক্তি, যিনি পূর্বে একটি টেলিভিশন চ্যানেলে কর্মরত ছিলেন।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিন্টো রোড এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরির সময় পুলিশ এনায়েতকে আটক করে। পরে আদালতের অনুমতিতে তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়।