আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক তৎপর হয়ে উঠেছে জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচনের পদ্ধতিগত সংস্কার, জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ নানা ইস্যুতে সোচ্চার থাকার পাশাপাশি দলটি নিজেদের সাংগঠনিক প্রস্তুতিও জোরদার করেছে। সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনায় তারা আগে থেকেই মাঠ পর্যায়ে গণসংযোগ চালাচ্ছে।
শুধু তাই নয়, ইসলামি ও সমমনাদের নিয়ে নির্বাচনি জোট গঠনের লক্ষ্যও নিয়েছে জামায়াত। এ জন্য তারা নিয়মিত বৈঠক ও যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। যদিও এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো সমঝোতা হয়নি, তবে অন্তত নয়টি দল জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে জামায়াতের সঙ্গে একমত হয়েছে। পাশাপাশি পিআর পদ্ধতি চালু, সমান সুযোগের পরিবেশ নিশ্চিতকরণ এবং জাতীয় পার্টির রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতেও আলোচনা হয়েছে।
সম্প্রতি জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, জাগপা ও নেজামে ইসলাম পার্টি যৌথভাবে ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। তাদের দাবি—জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন, পিআর পদ্ধতির বাস্তবায়ন এবং পাঁচ থেকে সাত দফা সংস্কার।
জামায়াত সংশ্লিষ্টরা জানান, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, জাগপা ও নেজামে ইসলাম পার্টির পাশাপাশি ইসলামী ঐক্যজোট, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ ও এবি পার্টিকেও সঙ্গে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনি সমঝোতা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
ইতোমধ্যে ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নিরঙ্কুশ বিজয় এবং ছাত্রদলের ভরাডুবি ইসলামী শিবিরে নতুন আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে। এ কারণে সমমনাদের মধ্যে জামায়াত নেতৃত্বাধীন জোট নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “আমরা জোট গঠনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। সবাই একমত হলে নির্বাচনি জোট হবে। এর আগে সংস্কার, পিআর পদ্ধতি চালু ও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠার আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”
ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান জানান, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হয়েছে—তারা ঐক্যবদ্ধভাবেই নির্বাচন করবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জামায়াত নেতৃত্বে আসনভিত্তিক সমঝোতার ভিত্তিতে একটি বড় জোট গড়ে উঠবে।
অন্যদিকে এবি পার্টি, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ ও আপ বাংলাদেশকে নিয়ে একটি মধ্যপন্থি মোর্চা গঠনেরও আলোচনা চলছে, যা পরবর্তীতে বড় কোনো জোটের সঙ্গে একীভূত হতে পারে।
খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলনসহ কয়েকটি ইসলামি দল জানিয়েছে, তারা প্রাথমিকভাবে প্রার্থী ঠিক করে রেখেছে এবং একক প্রার্থীর মাধ্যমে নির্বাচন করার পক্ষে।
এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতারা জানান, এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির ঐক্য ও জাতীয় সরকারের ধারণা নিয়েই তারা কাজ করছে।