আর মাত্র দুই দিন পর শুরু হচ্ছে জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশন। ঘটনাবহুল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এবারের অধিবেশনটি ২২ সেপ্টেম্বর ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হবে। পরদিন ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্বের ১৯৩টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা যোগ দেবেন মূল সাধারণ বিতর্কে।
এবারের আলোচনায় গুরুত্ব পাবে—বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান মানবিক সংকট, গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর পদক্ষেপ। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হবে রোহিঙ্গা সংকট এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার বিষয়।
অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য
‘একসঙ্গে ভালো: শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের পথে ৮০ বছর ও আরো বেশি’ (Better Together: 80 Years and More for Peace, Development and Human Rights)। জাতিসংঘের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এ অধিবেশনে বিগত আট দশকের সাফল্য পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের। তার সফরসঙ্গীদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির আখতার হোসেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবিরসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
প্রধান উপদেষ্টার কর্মসূচি
২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাধারণ আলোচনায় বক্তব্য রাখবেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তার ভাষণে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের সংস্কার কার্যক্রম, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি, শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ভূমিকা, রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন ও ন্যায়বিচার, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ, সম্পদ পাচার রোধ, নিরাপদ অভিবাসন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তি স্থানান্তর, এবং ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতি ও স্থায়ী শান্তির আহ্বান তুলে ধরবেন।
যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবের স্বাগত অভ্যর্থনা, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকসহ একাধিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও সাইড ইভেন্টে অংশ নেবেন।
রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে বিশেষ বৈঠক
৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর সাধারণ পরিষদে প্রধান উপদেষ্টা এই ধরনের বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা দ্রুতই আন্তর্জাতিক সমর্থন পায়। পরে সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব পাস করে এবারের বিশেষ বৈঠকের আয়োজন নিশ্চিত করা হয়।