চলমান আন্তর্জাতিক ইসলামী বইমেলায় এ বছর নারী পাঠকদের উপস্থিতি বিশেষভাবে চোখে পড়ার মতো। মাদরাসার শিক্ষার্থী ও আলেম-ওলামাদের পাশাপাশি সাধারণ পাঠকদের সঙ্গে নারীরাও সমান উৎসাহ নিয়ে বই কিনছেন। আয়োজক কমিটি তাই নারীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে রেখেছে নানা বিশেষ ব্যবস্থা।
শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ও পূর্ব চত্বরে জমে উঠেছে আন্তর্জাতিক ইসলামী বইমেলা-২০২৫। নারীরা সবচেয়ে বেশি আগ্রহী ইসলামি ইতিহাস, সংস্কৃতি, জীবনযাপন, উপন্যাস ও শরিয়াহ-সংক্রান্ত বইয়ের প্রতি। তাদের মতে, এসব বই কেবল জ্ঞান বাড়ায় না, বরং দৈনন্দিন জীবনে ইসলামি আদর্শ চর্চাকে সহজ করে তোলে।
নারী দর্শনার্থীদের জন্য মেলায় রয়েছে আলাদা ফিমেল জোন, নামাজের স্থান, ফুডকোর্ট এবং শিশুদের জন্য ‘কিডস প্লে জোন’। তবে আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা এখনো হয়নি।
পল্লবী থেকে সন্তানকে নিয়ে আসা নিশাত জাহান জানান, “আমরা চাই সন্তানদেরকে সঠিক পথে গড়ে তুলতে। তাই ইসলামি ইতিহাস ও বিধিবিধান জানা অপরিহার্য। এ কারণে নবী-রাসুলদের ইতিহাসভিত্তিক ও ইসলামি কার্টুন সমৃদ্ধ বই কিনেছি।”
ডেমরা থেকে আসা দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়াম আক্তার বলেন, “গত তিন বছর ধরে আসছি এ মেলায়। এবার আরও সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। আমি আজ ইসলামি ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ক কয়েকটি বই কিনেছি। তরুণ-তরুণীদের অংশগ্রহণই এই মেলাকে প্রাণবন্ত করবে।”
ধানমন্ডি থেকে আসা যায়নাব বিনতে মনোয়ার জানান, তিনি ইসলামি উপন্যাস ও পারিবারিক জীবনে ইসলামের প্রয়োগ নিয়ে লেখা বই কিনেছেন। এছাড়া ইমাম গাজ্জালির চিঠিও সংগ্রহ করেছেন। তার প্রত্যাশা—এ বইমেলা আরও বড় পরিসরে আয়োজন করা হবে।
মেলা কমিটির সদস্য ও রুহামা পাবলিকেশনের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, “নারীদের মধ্যে ইসলামি বইয়ের চাহিদা বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। এ কারণে আমরা ফিমেল কর্ণার, আলাদা নামাজ ও ফুডকোর্টের ব্যবস্থা রেখেছি। আলাদা ওয়াশরুমের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে।”
মাসব্যাপী এ মেলায় ১৯৯টি স্টল রয়েছে। এতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ দেশের নামকরা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও মিশর, লেবানন ও পাকিস্তানের প্রকাশকরা অংশ নিয়েছে। মেলায় লেখক কর্নার, ফুড কর্নার, আলোচনা সভা ও কবিতা পাঠের আয়োজনও থাকছে। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এবং ছুটির দিনে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।