খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির বেশ কয়েকটি উপজেলায় টানা পাঁচ মাস ধরে এয়ারটেল ও রবি নেটওয়ার্ক বন্ধ রয়েছে। পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের নাশকতা, দুর্বৃত্ত কার্যক্রম ও চাঁদাবাজির কারণে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন দুর্গম এলাকার সাধারণ উপজাতি ও বাঙালি বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, মার্চ থেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকায় চিকিৎসা, শিক্ষা, জরুরি যোগাযোগ—সবকিছুতে মারাত্মক সমস্যা তৈরি হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি গ্রামগুলোতে পানির কষ্ট, স্বাস্থ্যসেবা সংকট, এবং জরুরি চিকিৎসার অভাবে অকাল মৃত্যু যেন নিত্যদিনের ঘটনা। কিন্তু এসব অসহায় মানুষের দুঃখ-কষ্ট নিয়ে কেউ কথা বলে না।
বিশ্লেষকদের মতে, পাহাড়ের সাধারণ মানুষ সত্যিই নিরীহ ও কষ্টে থাকলেও কিছু সশস্ত্র সন্ত্রাসী চক্র তাদের ভিক্টিম প্লে করে সুবিধা নেয়। অথচ প্রকৃত সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী আরও পিছিয়ে যায়।
অভিযোগ রয়েছে, সড়ক উন্নয়ন কিংবা সেনাবাহিনীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়েও একই ধরনের বাধা তৈরি করে সন্ত্রাসীরা। তারা ‘সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার’ দাবিকে সামনে এনে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতে চায়। অথচ সেনাবাহিনী থাকার পরও পাহাড়ে নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অব্যাহত আছে। ফলে সেনা প্রত্যাহার হলে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে, সেটি সহজেই অনুমেয়।
সাধারণ মানুষদের অভিযোগ, মূলধারার গণমাধ্যমগুলো এ ধরনের ইস্যুতে নীরব থাকে। প্রথম আলো কেবল রবির দেওয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও সেখানে সন্ত্রাসীদের পরিচয় বা অপরাধ কার্যক্রমের বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি। এতে প্রকৃত পরিস্থিতি আড়ালে থেকে যায় এবং সুশীল সমাজ কেবল একপক্ষীয় মানবিকতার গল্প তুলে ধরে।
স্থানীয়দের দাবি, পাহাড় নিয়ে কথা বলার সময় প্রকৃত সুবিধাবঞ্চিতদের কথা বলতে হবে। পাহাড় কেবল কারও একার নয়, এটি বাংলাদেশের অংশ, যেখানে পাহাড়ি-বাঙালি মিলেই বসবাস করে। তাই যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা, চিকিৎসা ও উন্নয়ন সবার জন্য নিশ্চিত করার পাশাপাশি সন্ত্রাসী চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
স্থানীয়দের বক্তব্য: “আমরা বলি না, পাহাড়ে সবাই সন্ত্রাসী। কিন্তু কিছু সন্ত্রাসীর কারণেই পুরো পাহাড় অশান্ত হয়। আর সেই সুযোগে সাধারণ মানুষ বঞ্চিতই থেকে যায়।”