আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রদত্ত সাক্ষ্য ও জব্দ করা অডিও রেকর্ডের সূত্র ধরে প্রকাশ হয়েছে যে, ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন দমাতে তখনকার ক্ষমতাচ্যুত সরকারের কাছ থেকে গৃহীত পরিকল্পনা ও নির্দেশনা ছিল। সাক্ষ্য ও রেকর্ডে বলা হয়েছে—ড্রোনের মাধ্যমে ঢাকার বিভিন্ন জনসমাগম স্থলের ছবি তোলা হবে এবং হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালিয়ে বা বোমা ফেলে ওই স্থানে হামলা চালানোর কথাও বলা ছিল।
ট্রাইব্যুনালে বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা আইটি বিশেষজ্ঞ প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা ৫৩তম সাক্ষী হিসেবে হাজির হয়ে আদালতে ওই অডিও রেকর্ড উপস্থাপন করেন। জোহা জানান, সিআইডি ফরেনসিক পরীক্ষার পর ফোনালাপগুলোর প্রামাণিকতা যাচাই করা হয়েছে এবং মোট ৬৯টি অডিও ক্লিপ ও তিনটি মোবাইল নম্বরের কল রেকর্ড জব্দ করা হয়েছে।
সাক্ষ্যে তুলে ধরা এক সংলাপে তখনকার প্রধানমন্ত্রী (ক্ষমতাচ্যুত) শেখ হাসিনা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের কথোপকথন শুনানো হয়। ঐ আলাপের এক অংশে শেখ হাসিনা বলেন—“আমি সেনাপ্রধানের সঙ্গে কথা বলছি, ওরা রেডি থাকবে”—এমন কথাও পাওয়া গেছে; আলোচনা চলাকালীন ড্রোন দিয়ে ছবি তোলা এবং হেলিকপ্টারে কিছু কার্যক্রম চলছে—এই ধরনের কথাও রেকর্ডে আছে।
অডিও ক্লিপগুলোর খণ্ডনে ট্রাইব্যুনালে উত্থাপিত প্রশ্নগুলোর মধ্যে রয়েছে, কোথায় কোথায় গ্যাদারিং দেখা গেছে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে রাতের অজুহাতে অভিযান, গ্রেপ্তার ও প্রয়োজন হলে লেথাল ওয়েপন ব্যবহারের নির্দেশনার দাবি। প্রসিকিউটরের উপস্থাপিত নমুনা কলের ভিত্তিতে আদালত বক্তব্যের প্রাসঙ্গিক অংশগুলো যাচাই করছে।
প্রসঙ্গত—এই ধরনের আলাপ-রেকর্ড নিয়ে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিবিধ রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে এবং তদন্তকারী সংস্থাগুলো সেই সূত্রগুলো যাচাই করে অভিযোগের সত্যতা নির্ধারণের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। ট্রাইব্যুনালে পেশকৃত দলিল ও সাক্ষ্যাভিযান চলমান রয়েছে।