বৃহস্পতিবার, আগস্ট ২১, ২০২৫
আজাদির ডাক
  • হোম
  • বাংলাদেশ
  • রাজনীতি
    • বিএনপি
    • আওয়ামী লীগ
    • জামায়াত
    • এনসিপি
    • অন্যান্য
  • আন্তর্জাতিক
  • বিশ্লেষণ
  • মতামত
  • ইসলাম
  • খেলা
  • ফিচার
  • ফটো
  • ভিডিও
  • বিবিধ
    • শিক্ষাঙ্গণ
No Result
View All Result
আজাদির ডাক
  • হোম
  • বাংলাদেশ
  • রাজনীতি
    • বিএনপি
    • আওয়ামী লীগ
    • জামায়াত
    • এনসিপি
    • অন্যান্য
  • আন্তর্জাতিক
  • বিশ্লেষণ
  • মতামত
  • ইসলাম
  • খেলা
  • ফিচার
  • ফটো
  • ভিডিও
  • বিবিধ
    • শিক্ষাঙ্গণ
No Result
View All Result
আজাদির ডাক
No Result
View All Result
হোম বাংলাদেশ

সাবেক সিইসি নুরুল হুদার যত অপকর্ম

তুহিন সিরাজী - তুহিন সিরাজী
জুন ২৯, ২০২৫
A A
সাবেক সিইসি নুরুল হুদার যত অপকর্ম
Share on FacebookShare on Twitter

দেশের নির্বাচনব্যবস্থা যাদের মাধ্যমে ধ্বংস হয়েছে, এদের অন্যতম একজন হচ্ছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা। ‘নিশিরাতের’ ভোটের মূল হোতা তকমা পাওয়া সাবেক এই সিইসি জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে চরম বিতর্কিত করেন।

তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্রও বাতিল করে দিয়েছিলেন। তার সময়ে দেশের নির্বাচনব্যবস্থা আইসিইউতে চলে গিয়েছিল বলে খোদ তার কমিশনের সদস্য মাহবুব তালুকদার মন্তব্য করেছিলেন। তার সময় অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে ‘রক্তাক্ত নির্বাচন’ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছিলেন তিনি।

সিইসি থাকা অবস্থায়ই নুরুল হুদার বিরুদ্ধে ইভিএম কেনা ও প্রশিক্ষণসহ নানা বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ওইসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি ওঠে। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন সুনির্দিষ্ট করে হুদা কমিশনের সময়কার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে তা তদন্তের সুপারিশ করেছে। দায়িত্ব নেওয়ার সময় নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের ঘোষণা দিলেও কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে নিজেকে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের দলদাসে পরিণত করেন। তিনি জেলা প্রশাসক থাকাকালে কুমিল্লা ডিসি অফিস থেকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছবি নামিয়ে ফেলার ঘটনা ঘটে।

নুরুল হুদাকে গত ২২ জুন গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে আটক করে ওইদিন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। ওই সময় বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে জুতার মালা পরিয়ে দেয়। এর আগে সেদিন সকালেই নুরুল হুদাসহ সাবেক তিন সিইসি ও তাদের কমিশন সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করে বিএনপি। পরদিন ২৩ জুন আদালতে হাজির করা হলে নুরুল হুদার চারদিনের রিমান্ড আদেশ দেওয়া হয়। আদালতে জেরার মুখে নুরুল হুদা বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে। নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্সে সিলমারা ব্যালট পড়েছে শুনেছি। তবে সে বিতর্কের দায় একা নির্বাচন কমিশনের নয়।’

বিএনপির সময়কালে আওয়ামী লীগসংশ্লিষ্ট বহুল আলোচিত-সমালোচিত ‘জনতার মঞ্চ’ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় নুরুল হুদাকে। দেশের ১২তম প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তাকে বেছে নেয় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার। কথিত ‘বাছাই কমিটির’ মাধ্যমে হুদাকে ২০১৭ সালে সিইসি নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগ পাওয়ার পরপরই তার বিরুদ্ধে জনতার মঞ্চ-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করে বিএনপি।

জনতার মঞ্চে যুক্ত থাকার কারণে ২০০১ সালের পর তাকে যুগ্ম সচিব থাকাকালে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি ভূতাপেক্ষা পদোন্নতি পেয়ে সচিব হিসেবে অবসর নেন। সিইসি হওয়ার পর জনতার মঞ্চে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করলেও ওই সময় তার কুমিল্লার ডিসি অফিস থেকে খালেদা জিয়ার ছবি সরানোর বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে তিনি দাবি করেন, রাতের আঁধারে ওই ঘটনা ঘটে এবং তখন তিনি দপ্তরে ছিলেন না।

সিইসি নিয়োগ পাওয়ার পর সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নুরুল হুদা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের প্রতিশ্রুতি দিলেও করেন তার উল্টোটা। ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নেয় নুরুল হুদা নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন। ওই কমিশনের সদস্যরা ছিলেনÑমাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। গঠনের পর থেকেই ওই কমিশন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক ছিল।

শুরুতে বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন সিইসি হুদা। তার কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা ও কুমিল্লার জেলা প্রশাসক থাকাকালে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত ‘জনতার মঞ্চ’-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি সামনে এনে বিএনপিসহ বিরোধীরা বলেছিল, নুরুল হুদার নিয়োগ প্রশ্নবিদ্ধ। এরপর থেকেই একের পর কর্মকাণ্ডে তার নেতৃত্বাধীন কমিশনকে নিয়ে বিতর্ক আর পিছু ছাড়েনি। নানা অভিযোগ সঙ্গে নিয়ে ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিদায় নেয় হুদা কমিশন।

নির্বাচনে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয় নুরুল হুদার কমিশন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের আগের রাতেই আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তির বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। রাতে সিল মারার ভিডিওচিত্রও ওই সময় গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে ওই নির্বাচন ‘নিশিরাতের ভোট’ হিসেবে পরিচিতি পায়। ফলও হয় একতরফা।

এদিকে বিষয়টি জানার পরও ব্যবস্থা নেয়নি নুরুল হুদা কমিশন। উল্টো সেটি ধামাচাপা দেয়। নির্বাচনে ২৯৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট পায় ২৮৮টি। ভোটের কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলেও অনেক অসংগতি দেখা যায়, নির্বাচনে অস্বাভাবিক হারে ভোট পড়ে। ১০৩টি আসনের ২১৩টি ভোটকেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়ে। অর্থাৎ এসব কেন্দ্রের আওতাভুক্ত এলাকায় মৃত ও প্রবাসীরাও ভোট দেন। এক হাজার ২০৫টি কেন্দ্রে ভোট পড়ে ৯৬ থেকে ৯৯ শতাংশ, যা ছিল অস্বাভাবিক।

ওই নির্বাচনের ৫০টি আসনের নির্বাচনি প্রক্রিয়ার ওপর পরিবীক্ষণ করে ৪৭টিতেই অনিয়মের প্রমাণ পায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এর মধ্যে ৩৩টি আসনে নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালটে সিল মারা হয়েছে বলে তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়।

রাতের ভোট দেখিনি, দলগুলো সুযোগ হাতছাড়া করেছে

শতভাগ ভোট পড়া অস্বাভাবিক মনে করলেও রাতের ভোট ‘অভিযোগ আকারেই থেকে গেছে’ বলে মন্তব্য করেছিলেন নুরুল হুদা। দিনের ভোট রাতে হওয়ার অভিযোগ নিয়ে এক প্রশ্নে তার জবাব ছিল, অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে আমি কনক্লুসিভ কিছু বলতে পারি না। কারণ আমি তো দেখিনি, আপনিও দেখেননি রাতে ভোট হয়েছে। তদন্ত হলে বেরিয়ে আসত, বেরিয়ে এলে আদালতের নির্দেশে নির্বাচন বাতিল হয়ে যেত। সারা দেশের নির্বাচনও বাতিল হয়ে যেতে পারত। রাজনৈতিক দলগুলো কেন আদালতে অভিযোগ দেয়নি, সেটা তাদের বিষয়। এ সুযোগ তারা হাতছাড়া করেছে।

নুরুল হুদা সিইসি থাকাবস্থায় প্রভাব খাটিয়ে বাংলামোটরের টাইলসের দোকানদার ভাগনে এসএম শাহজাদার জন্য একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট নিশ্চিত করেন।

ইউপি নির্বাচন ছিল রক্তাক্ত, নির্বাচন আইসিইউতে

সংসদ নির্বাচনের মতো নুরুল হুদার আমলে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও ছিল বিতর্কিত। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হন ১১১ জন। ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিভিন্ন পদে দুই হাজার জনপ্রতিনিধি ভোট ছাড়াই নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে সহিংসতায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। অতীতে বাংলাদেশে ইউপি নির্বাচনে এতসংখ্যক নিহতের ঘটনা ঘটেনি। এতসংখ্যক বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ডও নেই।

তবে সহিংসতার জন্য প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের দায়ী করে নুরুল হুদা একাধিকবার বলেছিলেন, এখানে ইসির কোনো দায় নেই। অথচ তারই কমিশনের সদস্য প্রয়াত মাহবুব তালুকদার ইউপি নির্বাচনকে রক্তাক্ত নির্বাচন আখ্যায়িত করে বলেছিলেনÑপ্রকৃতপক্ষে নির্বাচন এখন আইসিইউতে।

নুরুল হুদার সময়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের এজেন্টদের বের করে দেওয়া, সরকারি দলের প্রার্থীর পক্ষে বুথ দখল করে ব্যালটে সিল মারা, পুলিশের বাড়াবাড়ি বা পক্ষপাতমূলক ভূমিকা নিয়ে বিরোধী পক্ষগুলোর নানা অভিযোগ ছিল। কিন্তু ইসিকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের দাবি

নুরুল হুদা কমিশনের বিরুদ্ধে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে গুরুতর অসদাচরণ, আর্থিক অনিয়মসহ ৯টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে তা তদন্তের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের দাবি ওঠে। ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতিকে ওই চিঠি দেন ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক। একই বছরের ১৭ জানুয়ারি তারা এ বিষয়ে আরেকটি চিঠি দেন রাষ্ট্রপতিকে। দেশের কোনো চলমান কমিশনের বিরুদ্ধে এ ধরনের ‍দুর্নীতির অভিযোগের ওঠার ঘটনা সেটাই ছিল প্রথম। অবশ্য ওই অভিযোগ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।

রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে উপেক্ষা করে ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য দেড় লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনা হয়। সিইসি নুরুল হুদা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, কমিশনার শাহাদাত হোসেন ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সিন্ডিকেট তড়িঘড়ি করে প্রকল্প গ্রহণ করে প্রচলিত দামের ১০ গুণের বেশি টাকায় ইভিএম কেনে। তিন হাজার ৮২৫ কোটি টাকার প্রকল্পে ইভিএম কেনার ক্ষেত্রে তিন হাজার ১৭২ কোটি টাকা রাষ্ট্রের ক্ষতি হয়। বর্তমানে প্রায় সবগুলো ইভিএমই ব্যবহারের অনুপযোগী। ইভিএম কেনার দুর্নীতিটি বর্তমানে তদন্ত করছে দুদক।

খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন হুদা

২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন নুরুল হুদা। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন বলে মত দেন। কিন্তু ভিন্নমত পোষণ করেন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন। এরপর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদাও ওই তিন নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। ফলে নির্বাচন কমিশনের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে খালেদা জিয়ার আপিল খারিজ হয়ে যায়। প্রায় ২০ মিনিট সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মনোনয়নপত্র বাতিলের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন নুরুল হুদা। এর ফলে বগুড়া-৬, ৭ ও ফেনী-১ আসনে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়।

নামানো হয় খালেদা জিয়ার ছবি

১৯৯৬ সালে সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে একদল আমলা শেখ হাসিনার সঙ্গে যুক্ত হয়ে সরকার পতনের আন্দোলনে মাঠে নেমেছিল। ওই সময় তারা আওয়ামী লীগের জনতার মঞ্চে উপস্থিত হয়ে একাত্মতা প্রকাশ করতেন। সচিবালয়ের প্রভাবশালী ওই কর্মকর্তারা সারা দেশে জেলা প্রশাসকসহ অন্য কর্মকর্তাদের জনতার মঞ্চের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতেন। তাদের অধীন এলাকায় সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে উৎসাহিত করতেন।

ওই সময় কুমিল্লার ডিসির দায়িত্বে থাকা নুরুল হুদাও জনতার মঞ্চের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে জড়িত থাকার কারণে ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর যুগ্ম সচিব নুরুল হুদাকে বাধ‌্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। তাকে সিইসি নিয়োগ দেওয়ার পরপরই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় নুরুল হুদা জনতার মঞ্চের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে দাবি করেন।

ওই সময় অভিযোগের জবাবে হুদা বলেন, তিনি জনতার মঞ্চের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তখন তিনি কুমিল্লার ডিসি ছিলেন। তবে তিনি ডিসি থাকাকালে কুমিল্লা ডিসি অফিস থেকে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছবি নামিয়ে ফেলার ঘটনা ঘটে। বিষয়টি তিনি স্বীকারও করেন। তিনি বলেন, ওই ছবি রাতের বেলায় নামানো হয়েছিল। তখনকার দিনে কে নামিয়েছে বা নামায়নি, তা তিনি জানতেন না।

প্রবীণ রাজনীতিক ড. কামালের সঙ্গে দুর্ব্যবহার

২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে দেশের প্রখ্যাত আইনজীবী ও প্রবীণ রাজনীতিক ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন নুরুল হুদা। নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। ওই সময় পুলিশের একপেশে ভূমিকার সমালোচনা করে পুলিশকে সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী বলে আখ্যা দেন ড. কামাল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সিইসি। ড. কামাল হোসেনকে উদ্দেশ করে সিইসি বলেন, ‘আপনি এমন কী হয়েছেন যে, পুলিশকে লাঠিয়াল-জানোয়ার বলেছেন। নিজেকে কী মনে করেন?’

বিতণ্ডার একপর্যায়ে ড. কামাল সিইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান। পরে ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সিইসির আচরণ ভদ্রজনিত ছিল না। এজন্য আমরা সভা বয়কট করেছি। তিনি বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন যৌথভাবে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে এবং নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। ইসি সরকারের পক্ষ হয়ে গেছে।

হুদা কমিশন সম্পর্কে যা বলেছে সংস্কার কমিশন

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন তার প্রতিবেদনে বলেছে, জালিয়াতির মাধ্যমে নির্বাচনকে একেবারে নিজের পক্ষে নিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় উদাহরণ ‘রাতের ভোট’-এর তকমা পাওয়া ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ভোটের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তির নজির তৈরি হয়েছিল, সেটাও পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। ওই নির্বাচন দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচিত হয়। তবে তৎকালীন নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কোনো তদন্ত বা নিরীক্ষা করেনি।

শেখ হাসিনার আমলের তিনটি নির্বাচনই বিতর্কিত হলেও সংস্কার কমিশন ২০১৮ সালের নির্বাচনের দায় নিরূপণের জন্য একটি বিশেষ তদন্ত কমিশন গঠনের সুপারিশ করে। অন্য দুটি নির্বাচন তদন্তের সুপারিশ না করার কারণ ব্যাখ্যা করে কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার আমার দেশকে বলেন, তিনটি নির্বাচনের মধ্যে দুটি নির্বাচন ছিল সম্পূর্ণ একতরফা। অংশগ্রহণবিহীন ওই দুটি নির্বাচন প্রকৃত অর্থে নির্বাচনই ছিল না। একাদশ সংসদ নির্বাচনে দেশের মানুষ আশা করেছিল একটি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। কিন্তু ওই নির্বাচনে বেশি জালিয়াতি হয়েছে। এ কারণে আমরা এই জালিয়াতির নির্বাচন তদন্তে কমিশন গঠন করার সুপারিশ করেছি। তবে সরকার চাইলে দশম ও দ্বাদশ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের দায় নিরূপণের জন্যও তদন্ত চালাতে পারে।

হুদার বেহুদা প্যাঁচাল

সিইসির দায়িত্ব পালনকালে নানা বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচিত-সমালোচিত হন নুরুল হুদা। তার অনেক বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রলও করা হয়। ২০২০ সালের ১২ নভেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভোটগণনা পদ্ধতির সমালোচনা করে ‘বাংলাদেশ থেকে তাদের শেখার আছে’ বলে মন্তব্য করেন।

ওই সময় ইভিএমের পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমেরিকা চার-পাঁচ দিনেও ভোট গণনা করতে পারে না। আর আমরা ইভিএমের মাধ্যমে চার-পাঁচ মিনিট থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে ভোট গণনা করে কেন্দ্রে ঘোষণা দিয়ে দেই। এই জিনিসটা তো আমেরিকায় নেই। প্রায় আড়াইশ বছরের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় তারা এটা এখনো করতে পারেনি। আমাদের কাছে শেখার আছে যুক্তরাষ্ট্রের।’

২০২২ সালের ২৭ জানুয়ারি ‘আরএফইডি টক’ অনুষ্ঠানে নুরুল হুদা তার নির্বাচন কমিশনের সদস্য মাহবুব তালুকদার, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার ও সাবেক সিইসি এটিএম শামসুল হুদা ও তার কমিশনের কঠোর সমালোচনা করেন।

সমালোচনা করে নুরুল হুদা বলেন, বদিউল আলম মজুমদারের সঙ্গে কাজ করেননি বলে বিভিন্ন অভিযোগ করে যাচ্ছেন। মাহবুব তালুকদারের চিকিৎসার জন্য ইসি বছরে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। এ ছাড়া তিনি কমিশনে কোনো মিটিং থাকলে তা নিয়ে আগে থেকেই খুঁত ধরতে থাকেন। গণমাধ্যম ‘খাবে’ এমন কথা বলতে থাকেন। আর শামসুল হুদা এতদিন কিছু বলেননি। এখন সবক দিলেন। তবে তার কথাগুলো আমি সিইসি হিসেবে গ্রহণ করতে পারিনি। তিনি ‘আমিত্ববোধ’ থেকে সেসব কথা বলতে পারেন। ইসির দায়িত্ব ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করা। শামসুল হুদা নির্বাচন করেছেন ৬৯০ দিন পর।

মেয়াদ শেষের দিন ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি সাফল্যের সঙ্গে কাজ করেছি। সবকটি নির্বাচন শেষ করে দিয়েছি। একটা নির্বাচনও বাকি রাখিনি। সেদিন সংবাদ সম্মেলনে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিলÑআজকের পর সমাজে আপনাদের পরিবার-পরিজন, আত্মীয়স্বজন নানা সোসাইটিতে, নানা মানুষের সঙ্গে আপনাদের দেখা হবে। আপনারা কোনো কারণে নিজেদের মধ্যে বিব্রতবোধ করবেন কি না? এর জবাবে নুরুল হুদা বলেন, মোটেই না। আমরা বিব্রত নই, কোনো দুর্বলতা নেই। ওই দিন তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশন নিয়ে সমালোচনা থাকবেই, এটা বন্ধ করা যাবে না। সমালোচনা বন্ধ করতে হলে মার্শাল ল’ দিতে হবে।

নুরুল হুদার মধ্যে কোনো দুর্বলতা না থাকলেও বিদায়ের দিন ব্যর্থতার জন্য কেঁদেছিলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেছিলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আমাদের ব্যর্থতার গ্লানি ছাড়া আর কিছু দিতে পারেনি। জাতীয় নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের অস্তিত্ব ছিল না।

সম্পর্কিত খবর

বাংলাদেশ

আজকের পত্রিকার সংবাদ সম্পাদনা নিয়ে ক্ষোভ, আইনি পদক্ষেপ জরুরি

আগস্ট ২১, ২০২৫
বাংলাদেশ

ভারতে অনুপ্রবেশকালে দোয়ারাবাজার সীমান্তে ৪ হিজড়া আটক

আগস্ট ২১, ২০২৫
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে সব রাজনৈতিক দলের আবেদন
প্রধান সংবাদ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে সব রাজনৈতিক দলের আবেদন

আগস্ট ২১, ২০২৫

সপ্তাহের সেরা

  • ‘আজ না হোক কাল আমার ভালোবাসার চিহ্ন এঁকে দেবই’, খুবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে অশালীন প্রস্তাবের অভিযোগ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • জরিমানা দিয়ে দেশ ছাড়ছেন অবৈধ বিদেশিরা, নানা খাতে কাজ করছেন ১৯ হাজার ভারতীয়

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • বিহারীদের আলোচনা নানক-হাসিনার কথোপকথনে

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • সিএমপি কমিশনারের গুলি চালানোর নির্দেশ ফাঁস, খুলশী থানার কনস্টেবল অমি দাশ আটক

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নিহতের সংখ্যা সর্বোচ্চ দুই হাজার: পিনাকী ভট্টাচার্য

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সর্বশেষ খবর

‘হিরো না হাইজ্যাকার’ বিতর্ক নয়, প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন হোক বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে ঘিরে

আগস্ট ২১, ২০২৫

কনটেন্ট ক্রিয়েটর রাহির বাড়িতে লুকিয়ে আছেন তৌহিদ আফ্রিদি!

আগস্ট ২১, ২০২৫

চীন-পাকিস্তান-আফগানিস্তানের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে নানা প্রতিশ্রুতি

আগস্ট ২১, ২০২৫
  • হোম
  • গোপনীয়তা নীতি
  • শর্তাবলি ও নীতিমালা
  • যোগাযোগ
ইমেইল: [email protected]

স্বত্ব © ২০২৪-২০২৫ আজাদির ডাক | সম্পাদক: মঈনুল ইসলাম খান | ৩, রাজউক এভিনিউ, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

No Result
View All Result
  • হোম
  • বাংলাদেশ
  • রাজনীতি
    • বিএনপি
    • আওয়ামী লীগ
    • জামায়াত
    • এনসিপি
    • অন্যান্য
  • আন্তর্জাতিক
  • বিশ্লেষণ
  • মতামত
  • ইসলাম
  • খেলা
  • ফিচার
  • ফটো
  • ভিডিও
  • বিবিধ
    • শিক্ষাঙ্গণ

স্বত্ব © ২০২৪-২০২৫ আজাদির ডাক | সম্পাদক: মঈনুল ইসলাম খান | ৩, রাজউক এভিনিউ, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০