ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন-২০২৫ এ ঘোষিত প্যানেলে নারী প্রার্থীর সংখ্যায় পিছিয়ে রয়েছে ছাত্রদল। ২৮ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ ছাত্রদলের প্যানেলে মাত্র দুইজন নারী প্রার্থীর জায়গা হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি নারী প্রার্থীর স্থান হয়েছে ইমি ও বসুর নেতৃত্বে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনের একাংশ ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেলে; সেখানে সর্বোচ্চ ১২ জন নারী প্রার্থীর স্থান হয়েছে। অন্যদিকে, ছাত্রশিবিরের প্যানেলে ছাত্রদলের চেয়ে দ্বিগুণ অর্থাৎ চারজন নারী প্রার্থীর স্থান হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের প্যানেলে ৬ জন নারী প্রার্থীর স্থান হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মনে করছে, নারী প্রার্থীর অংশগ্রহণে এই নির্বাচনের প্রতিযোগিতাকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তুলবে। কিন্তু ছাত্রদল সেখানে পিছিয়ে রয়েছে। এই প্যানেলে নারী প্রার্থীর অংশগ্রহণ আরও বাড়ানো উচিত ছিল বলে তারা মনে করে। তবে ছাত্রদল বলছে, ডাকসুতে ইনক্লুসিভ প্যানেল করার চিন্তা থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকেও আনা হয়েছে। যার জন্য নারী প্রার্থী কম রাখা হয়েছে।
আজ বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এক সংবাদ সম্মেলনে ডাকসু নির্বাচনে প্যানেল ঘোষণা করে ছাত্রদল। এ প্যানেল থেকে পাঠকক্ষ ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে মনোনয়ন পেয়েছেন চেমন ফারিয়া ইসলাম মেঘলা। এছাড়া সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন একমাত্র নারী প্রার্থী মেহেরুন্নেসা কেয়া।
অন্যদিকে, ছাত্রশিবিরের প্যানেলে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ফাতেমা তাসনিম জুমা আর পাঠকক্ষ ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে আছেন উম্মে সালমা। পাশাপাশি দুইজন নারীও এই প্যানেল থেকে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তারা হলেন সাবিকুন নাহার তামান্না ও আফসানা আক্তার।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের প্যানেল এজিএস (সহ-সাধারণ সম্পাদক) পদে আশরেফা খাতুনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তাছাড়া আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে আনিকা তাহসিনা, কমনরুম ও ক্যাফেটরিয়া সম্পাদক পদে মিতু আক্তার এবং সদস্য পদে তাপসী রাবেয়া, রওনক জাহান ও মাহফুজা নওয়ার নওরীনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছ।
তবে ইমি ও বসুর নেতৃত্বে ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেলে সবচেয়ে বেশি নারীর প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। এই প্যানেলে ভিপি পদে শেখ তাসনিম আফরোজকে (ইমি) ছাড়াও কমনরুম ও ক্যাফেটরিয়া পদে নুজিয়া হাসিন রাশা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ফারিয়া মতিন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে মালিহা তাবাসসুম, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পদে শেখ তাসনুভা সৃষ্টিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া এই প্যানেলে সদস্য পদে মিশকাতুল মাশিয়াত, আতিকা আনজুম অর্থী, পৃথিং মারমা, ইসরাত জাহান ইমু, আনিয়া ফাহমিন, রাহনুমা আহমেদ নিরেট এবং হেমা চাকমা প্রার্থী হয়েছেন।
জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানসুরা আলম বলেন, ডাকসুতে আমাদের প্যানেলে যোগ্য ও প্রাসঙ্গিক প্রার্থীকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ইনক্লুসিভ প্যানেল করার চিন্তা থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকেও আনা হয়েছে। যার জন্য নারী প্রার্থী কম। তাছাড়াও মেয়েদের হলগুলোতে সুষ্ঠু প্যানেল দেওয়া হয়েছে। শক্তিশালী হল সংসদ তৈরি করতে চাওয়ায় কেন্দ্রে নারী কম।
ছাত্রদলের ডাকসু প্যানেলে জিএস প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিম বলেন, অন্যকোন ছাত্র সংগঠন নারীদের হলগুলোতে কোন প্যানেল দেয়নি। তবে ছাত্রদল প্রত্যেকটি মেয়েদের হলে প্যানেল দিয়েছে। সুতরাং আমাদের যেসব নারী শিক্ষার্থী রয়েছে তাদের নেতৃত্বে যেন প্রতিষ্ঠিত হয় সেজন্য তাদের হলগুলোতে প্রকাশ্যে প্যানেল দিয়েছি। সেই সাথে ডাকসু কেন্দ্রীয় প্যানেলেও আমরা দুইজন নারী শিক্ষার্থীকে রেখেছি। তাই আমরা নারীদের নেতৃত্বেকে প্রাধান্য দিচ্ছি যেটা হোক হল পর্যায়ে বা কেন্দ্রীয় পর্যায়ে।