ঋণখেলাপি হওয়ায় পদ হারিয়েছেন বেসরকারি প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালক শাহ মো. নাহিয়ান হারুন। তার মালিকানাধীন রাজবীথি ট্রাভেলস লিমিটেড স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে খেলাপি হয়েছে। সম্প্রতি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক তার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অভিযোগ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নাহিয়ান হারুনকে ঋণ পরিশোধে দুই মাস সময় দিলেও তিনি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছেন। এর ফলে প্রিমিয়ার ব্যাংক থেকে তার পরিচালক পদ শূন্য করা হয়েছে। ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রিমিয়ার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ব্যাংক-কোম্পানি আইন, ১৯৯১–এর ১৭ ধারার আওতায় প্রদত্ত নোটিসের শর্ত অনুযায়ী নোটিস গ্রহণের দুই মাসের মধ্যে শাহ মো. নাহিয়ান হারুন নোটিসে উল্লিখিত অর্থ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৪ মে থেকে প্রিমিয়ার ব্যাংকে তার পরিচালক পদ শূন্য হয়ে গেছে। নোটিসে উল্লিখিত স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পাওনা আদায়ে ব্যাংক–কোম্পানি আইন, ১৯৯১–এর ১৭(৫) ধারার বিধান কার্যকর হবে। ১৭(৫) ধারা অনুযায়ী, প্রিমিয়ার ব্যাংকে থাকা তার শেয়ার বিক্রি করে অন্য ব্যাংকের ঋণ শোধ করা যাবে। অর্থাৎ, প্রিমিয়ার ব্যাংকে থাকা তার শেয়ার বিক্রি করে ঋণের সমপরিমাণ টাকা নিতে পারবে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক।
এ বিষয়ে জানতে প্রিমিয়ার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আবু জাফরকে ফোন করা হলে তিনি কল ধরেননি। পরবর্তীতে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করা হলে সিন করেও উত্তর দেননি।
জানা গেছে, রাজবীথি ট্রাভেলস লিমিটেডের এমডি শাহ মো. নাহিয়ান হারুন। এটি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের গ্রাহক। এই গ্রাহকের অনুকূলে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ঋণ রয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা, যা খেলাপি হয়ে পড়েছে। তিনি বেসরকারি প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালক। তবে ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে এখনো শাহ মো. নাহিয়ান হারুনের নাম বাদ দেওয়া হয়নি। এছাড়া তিনি আলোচিত রেইনট্রি হোটেল ও নাভস্টার শিপিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান।
শাহ মো. নাহিয়ান হারুন আওয়ামী লীগের সাবেক বজলুল হক হারুনের (বিএইচ হারুন) ছেলে। বিএইচ হারুন প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালক ও ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। খলিলুর রহমানের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিএইচ হারুন ব্যাংকের পরিচালক ও ভাইস চেয়ারম্যান পদ হারান। পরে ওই ব্যাংকের পরিচালক হন তার ছেলে নাহিয়ান হারুন। আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটির সদস্যও ছিলেন নাহিয়ান।
ঋণের বিষয়ে জানতে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এমডি হাবিবুর রহমান আমার দেশকে বলেন, ‘তার চারটি প্রতিষ্ঠান ২৪ কোটি টাকার ঋণ নেয়। বর্তমানে এসব ঋণের স্থিতি ৭০ কোটি টাকা। ঋণ পরিশোধ না করার কারণে একটি প্রতিষ্ঠান খেলাপি করা হয়েছে। ব্যাংক তাগাদা দিলেও টাকা দিচ্ছে না। এখন যেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংক সিদ্ধান্ত দিয়েছে, তাই প্রিমিয়ার ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার শেয়ার বিক্রি করে ঋণের টাকা আদায় করা হবে।’