জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ও প্রত্যয়ে আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ‘ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ’ (আপ বাংলাদেশ)। ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ, ধর্মবিদ্বেষ এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে আত্মপ্রকাশ করলো এই প্ল্যাটফর্মটি।
শুক্রবার বিকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন জুলাই বিপ্লবের শহীদ ওসমান পাটোয়ারির পিতা আব্দুর রহমান।
আপ বাংলাদেশ-এর আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ এবং সদস্যসচিব আরেফিন মুহাম্মদ হিজবুল্লাহ। এছাড়া রাফে সালমান রিফাত প্রধান সমন্বয়কারী, নাঈম আহমেদ প্রধান সংগঠক এবং শাহরীন ইরা মুখপাত্র হয়েছেন। এসময় ৮২ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত জুলাই আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীরা, আহত যোদ্ধারা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
এসময় আবেগতাড়িত কণ্ঠে শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর পিতা বলেন, আমার সন্তানকে ৫৫টি গুলি করা হয়েছে। নয় মাস পেরিয়ে গেলেও খুনিদের বিচার হয়নি। খুনিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়, সরকার আমাদের ব্যঙ্গ করছে। আমাদের হৃদয়ের দাবি- আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হোক।
আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট যেন হারিয়ে না যায়, সেজন্যই এই প্ল্যাটফর্ম। এটি মূলত একটি পলিটিক্যাল প্রেশার গ্রুপ। নতুন রাজনীতি মানে শুধুই শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন- আমাদের রাজনীতি তাই।
প্লাটফর্মটির প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা উল্লেখ করে জুনায়েদ বলেন, পিলখানা, শাপলা ও জুলাই গণহত্যার মতো ভয়াবহ অপরাধের বিচার, ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ এবং জুলাইয়ের আহত যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার দাবিতে জনমত ও রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলা এই প্ল্যাটফর্মের প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা হবে।
বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন, সমাজের সর্বস্তরে যোগ্য ও নৈতিক নেতৃত্বের প্রতিষ্ঠা, সামাজিক সুবিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠাকরণ, সামাজিক নিরাপত্তা বিধান এবং ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সামাজিক চুক্তির ভিত্তিতে বাংলাদেশ পুনর্গঠন এই প্ল্যাটফর্মের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রা বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জানা যায়, জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করাই হবে এই প্লাটফর্মের প্রাথমিক লক্ষ্য। আর দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন করে যোগ্য ও নৈতিক নেতৃত্বের বিকাশ, সুবিচার ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করবে এটি। একই সাথে ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধের আলোকে সামাজিক চুক্তির পুনর্বহাল করে সাম্প্রদায়িক বন্ধন ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাপূর্ণ সমাজ গড়ায় কাজ লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে প্লাটফর্মটি । ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ, ধর্মবিদ্বেষ ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে এই প্লাটফর্ম সক্রিয় ভূমিকা থাকবে ।