বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতারা অভিযোগ করেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে নানাভাবে টালবাহানা ও শয়তানি চলছে। তাদের দাবি, দেশকে বাঁচাতে হলে জুলাই সনদ কার্যকর করতেই হবে, এটি ছাড়া কোনো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে না।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে পাঁচ দফা দাবিতে আয়োজিত মিছিল ও সমাবেশে এসব কথা বলেন তারা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ।
নেতারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গত এক বছরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে জুলাই সনদ প্রণয়ন করেছে। কিন্তু এখনো আইনি ভিত্তি দেওয়া হয়নি এবং বাস্তবায়নও হয়নি। নানা মহল এতে টালবাহানা করছে। তবে জুলাই সনদ নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র জনগণ মেনে নেবে না।
তাদের মতে, শুধু আইনি ভিত্তি নয়, জুলাই সনদ অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনও হতে হবে। কারণ, বিদ্যমান সংবিধান স্বৈরাচারী শাসনের সুযোগ তৈরি করে। সেই কাঠামোতে নির্বাচন হলে নতুন স্বৈরাচার জন্ম নেবে, যা জনগণ মেনে নেবে না।
খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মুসা বলেন, স্বৈরাচার পতনের পর দায়িত্ব নেওয়ার সময়ে প্রফেসর ইউনূসের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু জুলাই সনদ আইনি ভিত্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। একটি বড় দল ইচ্ছাকৃতভাবে আপত্তি তুলছে, তারাও স্বৈরাচারী হতে চায়। তিনি সতর্ক করে বলেন, “হাসিনা ভারতে পালাতে পেরেছে, কিন্তু তোমাদের পালাবার জায়গা থাকবে না। আমেরিকাও আশ্রয় দেবে না।”
প্রধান অতিথি মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর জুলাই সনদ প্রণীত হলেও এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। একটি বড় দল বলছে ক্ষমতায় গিয়ে সনদ বাস্তবায়ন করবে, কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে ক্ষমতায় গিয়ে অঙ্গীকার ভঙ্গের বহু নজির রয়েছে। তাই তিনি প্রস্তাব দেন, অধ্যাদেশ জারি বা গণভোটের মাধ্যমে অবিলম্বে জুলাই সনদ কার্যকর করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আগামীর বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে ও স্বৈরাচারের পুনরুত্থান ঠেকাতে জুলাই সনদই একমাত্র পথ। সনদ কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত খেলাফত মজলিস আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
এ সময় তিনি জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। তিনি বলেন, “আমরা উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই। বিএনপিসহ কয়েকটি দল বিরোধিতা করছে। কিন্তু আমরা পরিষ্কার করে বলছি, উচ্চকক্ষে পিআর ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না।”
এ ছাড়া গত এক বছরে গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করতে ব্যর্থ হওয়ায় সরকারের সমালোচনা করেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব। তার অভিযোগ, সরকারের ভেতরে এখনো আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী দোসররা সক্রিয় রয়েছে, তাদের বের করে দিতে হবে।