রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে সরাসরি ভোটারদের টাকা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’। সংগঠনটির দাবি, গত ১৮ সেপ্টেম্বর আরবি বিভাগের ২০২৪–২৫ সেশনের শিক্ষার্থীদের মাঝে ৫ হাজার টাকা করে বিতরণ করা হয়, যা নির্বাচনি আচরণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টায় রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর লিখিতভাবে এই অভিযোগ তুলে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল একাধিকবার নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করে প্রচারণা চালিয়েছে, যা নির্বাচন পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর। ১৫ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের জিএস প্রার্থী নাফিউল ইসলাম জীবন আরবি বিভাগের শহীদুল্লাহ অ্যাকাডেমিক ভবনের ৩০৬ নম্বর কক্ষে ক্লাস চলাকালীন প্রচারণা চালান। ১৮ সেপ্টেম্বর ভোটার শিক্ষার্থীদের ৫ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়। নির্ধারিত সময়ের বাইরে রঙিন লিফলেট বিতরণ, বহর নিয়ে প্রচারণা চালানো এবং ভোটার নন এমন ব্যক্তিদের প্রচারণায় যুক্ত করা হয়— যা নির্বাচনি আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পর জোটের জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, “শুরু থেকেই কিছু প্রার্থী নিয়ম ভঙ্গ করে আসছেন। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের আগেই অনেকে প্রচারণা শুরু করেন। আমরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের স্বার্থে আগে কোনো অভিযোগ দিইনি, কিন্তু আচরণবিধির এ ধরনের লঙ্ঘন চলতে থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “আমরা আবরার ফাহাদ স্মরণে নিপীড়নবিরোধী দিবস পালনের অনুমতি চেয়েছিলাম, যা কমিশন অনুমোদন দেয়নি। অথচ ছাত্রদল কোনো অনুমতি ছাড়াই বিকেলে নিজ উদ্যোগে কর্মসূচি করেছে।”
রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এফ নজরুল ইসলাম বলেন, “নির্বাচন কয়েকবার স্থগিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিছু শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন, ১৬ তারিখে ভোটগ্রহণ হবে ইনশাআল্লাহ।”
তিনি আরও জানান, নির্বাচনের বিলম্বে বাজেট ও ব্যয়ের কিছু পরিবর্তন আসলেও, কমিশন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ।
রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে এবারই প্রথমবারের মতো কোনো প্যানেলের বিরুদ্ধে টাকা বিতরণের অভিযোগ আনল অন্য প্রার্থী তালিকা, যা ক্যাম্পাসে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।