ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব হারানোর পর রাগ ও অভিমানে টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর থেকেই টেস্ট দলের নেতৃত্বে সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজ সামনে রেখে এখন বোর্ডের প্রধান চিন্তা—নতুন অধিনায়ক কে হবেন?
বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, লিটন দাসই এখনো পর্যন্ত বিসিবির প্রথম পছন্দ। যদিও ওয়ানডে দলে নেতৃত্ব দেওয়া মেহেদি হাসান মিরাজ সাম্প্রতিক সিরিজগুলোতে ব্যর্থ হওয়ায় টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে আপাতত বিবেচনায় নেই।
অভ্যন্তরীণ আলোচনায় নতুন একটি সম্ভাবনার কথাও উঠেছে—বিসিবি হয়তো শান্তকেই আবার টেস্ট অধিনায়কত্বের প্রস্তাব দিতে পারে। তার ব্যাটিং ফর্ম, নেতৃত্বের স্থিরতা এবং দলের ওপর প্রভাব বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
একাধিক পরিচালক জানিয়েছেন, শনিবার সভাপতির সঙ্গে বিভিন্ন বিভাগের বৈঠকের পর বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। তবে এখনো কিছুই চূড়ান্ত নয়। বড় প্রশ্ন একটাই—শান্ত কি এই দায়িত্ব নিতে রাজি হবেন? ওয়ানডে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর বোর্ডের প্রতি তার অভিমান এখনো কাটেনি।
বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, “ক্রিকেট অপারেশনস, নির্বাচক ও কোচিং স্টাফ মিলে আলোচনা করবে। যাকে তারা উপযুক্ত মনে করবেন, তাকেই নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হবে। তবে সেই খেলোয়াকেও দায়িত্ব নিতে সম্মত হতে হবে।”
তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে এখনো শান্তর সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি।
সাবেক ক্রিকেটার জাভেদ ওমর বেলিম মনে করেন, “শান্তকে ফেরানো গেলে সবচেয়ে ভালো হবে। যদি সে রাজি না হয়, তাহলে লিটন বা মিরাজের মধ্যে মিরাজ হতে পারে ভালো বিকল্প। শুধু পারফরম্যান্স নয়, মাঠে কৌশলগত চিন্তা করার ক্ষমতাও বিবেচনা করা জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের দল নিয়মিত পারফর্ম করতে পারে না, ফলে নতুন কাউকে দীর্ঘ মেয়াদে নেতৃত্বের জন্য প্রস্তুত করা যায়নি। ধারাবাহিকতা আসলেই ভবিষ্যৎ অধিনায়ক তৈরি করা সম্ভব হবে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আয়ারল্যান্ড সিরিজের আগে অধিনায়ক নির্বাচনই এখন বিসিবির সবচেয়ে বড় কাজ। তবে এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো—দলের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনা ও একটি স্পষ্ট নেতৃত্ব কাঠামো গড়ে তোলা।
বাংলাদেশ টেস্ট দল বর্তমানে পুনর্গঠনের পথে। এমন সময়ে নেতৃত্বে অনিশ্চয়তা শুধু মাঠের পারফরম্যান্স নয়, ড্রেসিংরুমের মনোবলকেও নড়বড়ে করে দিতে পারে। টেস্ট অধিনায়ক শুধু দল পরিচালনাই করেন না—তিনি দেশের ক্রিকেট সংস্কৃতির প্রতীক। তাই এখন বাংলাদেশের প্রয়োজন এমন এক অধিনায়ক, যিনি অনুপ্রেরণাদায়ী নেতৃত্বের মাধ্যমে দলকে ঐক্যবদ্ধ করে সামনে এগিয়ে নিতে পারবেন।
