জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে বিএনপিকে সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন প্রসঙ্গে সরকারের অবস্থান জানতে চেয়ে দলটি আইন উপদেষ্টার কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠিও পাঠিয়েছে।
রোববার (২ নভেম্বর) এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিটি আইন উপদেষ্টার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন নিয়ে বিএনপিকে দেওয়া আইন উপদেষ্টার ব্যক্তিগত আশ্বাস রাষ্ট্রীয় নিরপেক্ষতার পরিপন্থি। উপদেষ্টা হিসেবে তিনি সরকারের প্রতিনিধি—কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। তাই নির্বাচনী আইন সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এককভাবে কোনো দলকে আশ্বাস দেওয়া সরকারের নিরপেক্ষতা ও জনআস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
এনসিপি আরও উল্লেখ করেছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন নিয়ে আইন উপদেষ্টা নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের বিপরীত অবস্থান নিয়েছেন, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে অসঙ্গত।
চিঠিতে বলা হয়, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করলে তা গণতন্ত্র ও জবাবদিহিতার জন্য ক্ষতিকর। এতে নিবন্ধন ব্যবস্থার উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়, ভোটার জানেন না তিনি প্রকৃতপক্ষে কাকে ভোট দিচ্ছেন, এবং বড় দলগুলো ছোট ‘প্রক্সি দল’ ব্যবহার করে কৃত্রিম বহুদলীয়তা সৃষ্টি করে নিজেদের সুবিধা নেয়।
এনসিপি নির্বাচন কমিশন ও সংস্কার কমিশনের অবস্থানের সঙ্গে একমত জানিয়ে বলেছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ২০ অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন—কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবে না।
দলটির দাবি, এতে রাজনৈতিক বহুত্ববাদ সংকুচিত হবে না; বরং প্রকৃত গণতান্ত্রিক বহুত্ববাদ শক্তিশালী হবে। একই সঙ্গে ভোটারের অধিকার, রাষ্ট্রীয় স্বচ্ছতা ও সাংবিধানিক ভারসাম্যও নিশ্চিত হবে।
চিঠির শেষে সরকারকে এই বিষয়ে স্পষ্ট ও প্রকাশ্য অবস্থান জানানোর আহ্বান জানিয়েছে এনসিপি।
