ইন্টারনেটনির্ভর জীবনে রাতেও অনেকের বাসায় ওয়াই-ফাই সচল থাকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ঘুমানোর সময় রাউটার বন্ধ রাখলে তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী কি না—এ নিয়ে বিতর্ক বাড়ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ কেউ দাবি করছেন, রাতে ওয়াই-ফাই বন্ধ রাখলে ঘুম ভালো হয়, মানসিক চাপ কমে এবং মাথাব্যথাও কমে যায়। এসব দাবি কতটা সত্য—এ বিষয়ে চিকিৎসকদের মতামত প্রকাশ করেছে ভারতীয় দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
হায়দরাবাদের গ্লেনিগলস হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হিরণ রেড্ডির মতে, ওয়াই-ফাই রাউটার থেকে নির্গত রেডিয়েশনের মাত্রা খুবই কম এবং তা সাধারণত শরীরের বড় কোনো ক্ষতি করে না। মাত্র কয়েকদিন রাতে রাউটার বন্ধ রাখলে শরীরে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসার সম্ভাবনাও নেই। তবে কেউ যদি মনে করেন তিনি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গে বেশি সংবেদনশীল, তার ক্ষেত্রে মাথাব্যথা বা ঘুমের সমস্যায় সামান্য উপশম মিলতে পারে—যদিও এ ধরনের সংবেদনশীলতার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখনো স্পষ্ট নয়।
অ্যাপোলো হাসপাতালের স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সুধীর কুমার বলেন, ওয়াই-ফাই সরাসরি মেলাটোনিন হরমোনকে প্রভাবিত করে—এমন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। বরং ফোন বা ল্যাপটপের স্ক্রিনের নীল আলোই ঘুমের ওপর বেশি বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং স্বাভাবিক মেলাটোনিন উৎপাদন কমিয়ে দেয়।
চিকিৎসকদের মতে, অনেকেই রাউটার বন্ধ রাখলে স্বাভাবিকভাবেই স্ক্রিন ব্যবহার কমান। এতে মন স্থির থাকে, মানসিক চাপ কমে এবং ঘুম ভালো হয়। ভালো ঘুম মানে উন্নত রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা, ভালো মানসিক স্বাস্থ্য ও মস্তিষ্কের উন্নত কর্মক্ষমতা।
সুতরাং, রাতে ওয়াই-ফাই বন্ধ রাখলে শরীরে বড় পরিবর্তন আসে—এমন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ না থাকলেও স্ক্রিন থেকে দূরে থাকা ও মনকে শান্ত রাখা ঘুমের মান উন্নত করতে পারে। তাই ঘুমের অভ্যাস ভালো রাখতে রাতে রাউটার বন্ধ রাখা একটি কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।







