ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়নে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদস্যরা নিজেদের ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে অংশ নিচ্ছেন—এমন বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (গাছাস) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের।
তার দাবি, ৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে ‘গুপ্ত শিবির’ সদস্যরা প্রকাশ্য রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। তৎকালীন ঢাবি শিবির সভাপতি সাদিক কায়েম ওই সময় ছাত্রলীগে ঢুকে পড়া শিবির নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা না করতে সুপারিশ করেছিলেন।
এই অভিযোগের জবাবে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের বর্তমান কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক এবং ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি মো. আবু সাদিক কায়েম (সাদিক কায়েম) একটি দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট দিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, “স্ক্রিনশটে যাদের নাম এসেছে, তারা কেউই ছাত্রশিবিরের সদস্য ছিলেন না। বরং ভিন্ন রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড থেকেও অনেক নির্দোষ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছিলেন—তাদের সুরক্ষা দেওয়া কোনো অপরাধ নয়।”
এ প্রসঙ্গে তিনি আব্দুল কাদের-এর দিকে ইঙ্গিত করে বলেন,
“যেখানেই যাই, ভাইয়েরা বলেন—‘আপনার কাদের দেখেন।’ আমি জিজ্ঞেস করি—একজন বিপদগ্রস্ত মানুষকে আশ্রয় দেওয়া কি অপরাধ? আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে বাসায় আশ্রয় দিইনি, কেন্দ্রীয় শিবিরের অনুরোধে আশ্রয় ও নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। অনেক দায়িত্বশীল নেতাই তার সাক্ষী।”
তিনি আরো বলেন, “আমার বাসার ঠিকানা যেখানে তৎকালীন সরকারও খুঁজে পায়নি, সেখানে কাদের কীভাবে পাবেন? আজ যদি তিনি আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে থাকেন, তবে অনেক সত্যই প্রকাশ করতে হবে।”
তার দাবি, কাদেরের প্রকাশিত স্ক্রিনশটটি তার সঙ্গে নয়, বরং অন্যদের সঙ্গে হওয়া কথোপকথন। বিকৃতভাবে তা উপস্থাপন করে ব্যক্তিগত ফায়দা নেওয়ার সংস্কৃতি শুরু হয়েছে—যা রাজনীতিতে ভয়ংকর প্রভাব ফেলতে পারে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, “স্ক্রিনশট পলিটিক্স চালু হলে এনসিপি-বাগছাসে শিবিরবিদ্বেষী হয়ে থাকা অনেকের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎও প্রশ্নের মুখে পড়বে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যক্তি আক্রমণ, বিকৃত চ্যাট ও ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস রাজনীতিতে অনাস্থা ও বিভাজন বাড়িয়ে তুলছে। গণতান্ত্রিক ঐক্য রক্ষায় এখনই এ ধরনের অপসংস্কৃতি থেকে সরে আসা জরুরি।