আজ ৬ আগস্ট, গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে সংঘটিত এক নৃশংস ঘটনার এক বছর পূর্ণ হলো। ২০২৪ সালের এই দিনে, স্বৈরাচারী সরকার প্রধান শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবরে আনন্দ-উল্লাসে ফেটে পড়েন কারাবন্দিরা।
কিন্তু এই আনন্দ মিছিলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন কারাগারের তৎকালীন জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা। অভিযোগ রয়েছে, তার নির্দেশেই ‘মিথ্যা অজুহাতে’ নিরীহ বন্দিদের ওপর চালানো হয় ঠাণ্ডা মাথায় বর্বর হত্যাযজ্ঞ।

অজ্ঞাত লাশ, গুম আর চাপা দেওয়া সত্য
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, অন্তত ৬টি লাশ ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত তাজউদ্দীন হাসপাতালে অজ্ঞাত পরিচয়ে ফেলে রেখে আসা হয়। আজ পর্যন্ত এই ঘটনার মোট নিহতের সংখ্যা সরকারিভাবে প্রকাশ করা হয়নি।
ধারণা করা হয়, এই ঘটনায় ৩২ জনের বেশি বন্দি শহীদ হন, আহত হন অসংখ্য বন্দি। সে সময় কাশিমপুরে গিয়ে দুঃসাহসিকভাবে সত্য তুলে ধরেন দেশের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানি।
সুব্রত বালার বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ ছিল
জেল সুপার সুব্রত কুমার বালার বিরুদ্ধে আগে থেকেই ছিল বন্দিদের ওপর নামাজ পড়ায় বাধা, চিকিৎসা বঞ্চনা, শারীরিক নির্যাতন, বাসি খাবার দেওয়া, ঘুম ও বিশ্রামে বিঘ্ন ঘটানো-সহ বহু অভিযোগ। বিশেষ করে কথিত ‘জঙ্গি নাটকে’ আটক ইসলামপন্থী বন্দিদের উপর তাঁর নির্যাতন ছিল বর্বর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
অভিযোগ রয়েছে, এই ব্যক্তির ভারতীয় সংযোগ এবং সরকারপ্রিয় ভুমিকার কারণেই এত গুরুতর অভিযোগের পরও তিনি বারবার পার পেয়ে যান।
বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং মানবাধিকার প্রশ্নবিদ্ধ
এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত, বিচার বা জবাবদিহিতা হয়নি। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই ঘটনাকে “রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রতীক” ও বিচারহীনতার ভয়াবহ দৃষ্টান্ত হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।