আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত নাহিদুজ্জামান নিশাদ দীর্ঘদিন স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতাদের সান্নিধ্যে ছিলেন। তাদের নিয়মিত আড্ডা ছিল তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও হোটেলে। ক্ষমতায় থাকতে দু’বার আওয়ামী লীগের ডামি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন।
কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট “জুলাই বিপ্লব”-এর পর ক্ষমতার পালাবদল ঘটলে নিশাদ দ্রুত দিক পরিবর্তন করেন। বিএনপির স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অল্প সময়েই গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সহসভাপতির পদ বাগিয়ে নেন। অভিযোগ রয়েছে, কয়েক কোটি টাকা খরচ করে তিনি এই পদ নিশ্চিত করেছেন।
নির্বাচনী ইতিহাস
গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা–ফুলছড়ি) আসনে ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে আপেল প্রতীকে অংশ নেন নিশাদ, তবে ভোটের আগের দিনই সরে দাঁড়ান। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে একই আসনের উপনির্বাচনেও অংশ নিলেও জনরোষের কারণে ভোটের আগে সরে গিয়েছিলেন।
অভিযোগের পাহাড়
বিএনপির তৃণমূল নেতারা অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগপন্থী এই অনুপ্রবেশকারী নেতা অর্থ ও প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে নিজের বলয় গড়ে তুলছেন।
ত্যাগী নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করে আওয়ামী ক্যাডারদের দলে অন্তর্ভুক্ত করা
ভিন্নমত দমন ও বহিষ্কার
মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে হয়রানি
ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটিতে টাকা খরচ করে লোক বসানো
প্রভাবের বিস্তার
বগুড়া শহরের বিলাসবহুল বাসভবনে থাকেন নিশাদ। সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের আতিথেয়তা, হোটেল রোচাসে আড্ডা-পার্টি, জয়যুগান্তর পত্রিকা, নিটোল টাটা ডিলারশিপ এবং অন্যান্য ব্যবসার মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করেন। এছাড়া অভিযোগ আছে, জয়পুরহাটের সাইবারটেক পলিটেকনিক ও বগুড়ার ‘স্কুল অব দ্য হলি কুরআন’ প্রতিষ্ঠান জোরপূর্বক দখল করেছেন।
দলের ভেতরে প্রতিক্রিয়া
গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. মঈনুল হাসান সাদিক বলেছেন,
> “হাইকমান্ডের নির্দেশেই নিশাদকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগগুলো হাইকমান্ডও জানে, পরবর্তী পদক্ষেপ তারাই নেবে।”
অভিযোগের বিষয়ে নিশাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া মেলেনি।