চীনের কুনমিংয়ের বিশেষায়িত হাসপাতালগুলো এখন বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশের জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য নতুন ভরসাস্থল হয়ে উঠেছে। অনিরাময়যোগ্য রোগেও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তুলছেন দেশটির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। খরচও তুলনামূলকভাবে ভারত, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের চেয়ে কম।
চিকিৎসাধীন বাংলাদেশি রোগীদের স্বজনেরা জানিয়েছেন, চীনের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা ব্যয়, সেবা ও পদ্ধতি নিয়ে তারা সন্তুষ্ট। কুনমিংয়ের কয়েকটি হাসপাতাল পরিদর্শনে সাংবাদিক প্রতিনিধিদলও এমন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছে।
চীনের ইউনান প্রদেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ-চীনের ৫০ বছরের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের অংশ হিসেবে বাংলাদেশিদের জন্য স্বল্প খরচে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা তাদের অঙ্গীকার। এজন্য আন্তর্জাতিক বিভাগ খোলা হয়েছে, ইংরেজিভাষী ডাক্তার-নার্স, দোভাষী, হালাল রেস্তোরাঁ ও অন্যান্য সুবিধাও চালু করা হয়েছে।
বাংলাদেশি চিকিৎসক ডা. আরিফিন ইসলাম বলেন, চীনের ডাক্তাররা রোগীর প্রতি বিশেষ যত্ন নেন। একজন ডাক্তারের বিপরীতে তিনজন নার্স থাকেন এবং রোগীদের সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হয়। রোবটিক সার্জারির ক্ষেত্রেও তারা দক্ষ এবং খরচ তুলনামূলকভাবে কম।
গত ছয় মাসে কুনমিংয়ের এক হাসপাতালে ৬৭ জন বাংলাদেশি রোগী চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। এর মধ্যে লিভার সিরোসিস ও ক্যানসারের মতো জটিল রোগীও ছিলেন। একজন রোগীর স্বজন জানান, মেরুদণ্ডের জটিল অস্ত্রোপচার ভারতে না হলেও চীনে সফলভাবে হয়েছে এবং খরচও কম পড়েছে।
বাংলাদেশি রোগীদের সুবিধার্থে কুনমিং, চুজিং, ডালি ও উশি শহরের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলো উন্মুক্ত করা হয়েছে। ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে এবং চট্টগ্রাম-কুনমিং রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে চিকিৎসা পর্যটন আরও সহজ হবে বলে আশা করছে দুই দেশ।