গত পনেরো বছরে বিপুলসংখ্যক মানুষ গুমের শিকার হয়েছেন। এই গুমের সঙ্গে রাষ্ট্রের পাঁচটি বাহিনীর চিহ্নিত কিছু কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন। এর মধ্যে র্যাবের কর্মকর্তারা ৬০ শতাংশ গুমে জড়িত ছিলেন। গত ৬ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গুমে জড়িত ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তাদের মধ্যে রয়েছেন ছয়জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
পাঁচজনই ডিজিএফআইর সাবেক মহাপরিচালক ও পরিচালক। তারা হলেন- লে. জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, লে. জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) তৌহিদুল ইসলাম।
অন্তর্বর্তী সরকার গুমের ঘটনাগুলো তদন্তের জন্য বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিটি গঠন করে গত বছরের ২৭ আগস্ট। কমিশনকে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুমের ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কমিশন ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ : অ্যা স্ট্রাকচারাল ডায়াগনসিস অব এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে দুটি অন্তর্বর্তী রিপোর্ট প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান বিচার গুম কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে গুম করা হতো তিনটি ধাপে। প্রথম ধাপে ছিল ‘কৌশলগত নেতৃত্ব’। এরা হলেন- ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিক এবং পলাতক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। দ্বিতীয় ধাপে ছিলেন- বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার চিহ্নিত কর্মকর্তারা।
তৃতীয় ধাপে বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার সদস্যরা ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতেন। গুম কমিশন গুমের এক হাজার ৮৫০টি অভিযোগ পেয়েছে। এই অভিযোগগুলোর মধ্যে এখনো ৩৪৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গুম কমিশনে যারা অভিযোগ দায়ের করেছেন, এখনো তাদের অনেককে হুমকি বা ‘থ্রেট’ করা হচ্ছে। ভিকটিমরা ভয়ে আছে। এসব থ্রেট করার প্রমাণ গুম কমিশনে রয়েছে। কমিশন গুম-খুনের জন্য জিয়াউল আহসানসহ ২৩ জন কমান্ডারকে চিহ্নিত করেছে।