ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলাকালীন টিএসসি কেন্দ্রের ক্যাফেটেরিয়া কক্ষে আগেই ‘ক্রস’ চিহ্ন দেওয়া একটি ব্যালট পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ও ঐক্যের ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদপ্রার্থী রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা।
শিবির সমর্থিত প্যানেল অভিযোগটিকে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার উদ্দেশ্যে করা একটি ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছে।
রুপাইয়া দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাংবাদিকদের জানান, তিনি ও তার এক বান্ধবী একসঙ্গে ভোট দিতে যান। ভোটকেন্দ্রের এক নম্বর টেবিল থেকে বান্ধবীকে যে ব্যালট দেওয়া হয়, সেটিতে আগেই ক্রস চিহ্ন দেওয়া ছিল শিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থী আবু সাদিক কায়েম ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী এস এম ফরহাদের নামের পাশে। বিষয়টি পোলিং কর্মকর্তাদের জানালে তারা জানিয়েছেন, এটি ওই শিক্ষার্থীর ভুলও হতে পারে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত পোলিং কর্মকর্তা রুমানা পারভীন এ্যানী বলেন, “ওই শিক্ষার্থী ব্যালট নিয়ে বুথে প্রবেশ করার পর খুব অল্প সময়ের মধ্যে বের হয়ে এসে অভিযোগ করেছেন। পরে সব ব্যালট পরীক্ষা করা হয়েছে, কোথাও কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। অভিযোগকারীকে একটি নতুন ব্যালট দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি শিক্ষার্থীর ভুলও হতে পারে।” তিনি আরও জানান, সকালে ব্যালট বাক্স খোলা ও সিলগালা করার সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা, পোলিং এজেন্ট এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, শিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থী আবু সাদিক কায়েম অভিযোগটিকে ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “একটি পক্ষ নির্বাচনি প্রক্রিয়া বানচালের চেষ্টা করছে। একুশে হলে ছাত্রদলের পক্ষে ক্রস চিহ্ন দেওয়া ব্যালট পাওয়া গেছে, এখন টিএসসিতেও একই অভিযোগ উঠছে। যারা এতে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
টিএসসি কেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। প্রতিটি বুথ সিসিটিভির আওতায় আছে এবং শিক্ষার্থী বুথে প্রবেশ করার পর অভিযোগ করার কারণে ফুটেজ পরীক্ষা করে বিষয়টি যাচাই করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “অভিযোগকারী ব্যালট হাতে নিয়ে অভিযোগ করলে তাৎক্ষণিক সমাধান সম্ভব হতো। বুথে প্রবেশের পর ফিরে এসে অভিযোগ করার সুযোগ নেই। তারপরও নতুন ব্যালট দেওয়া হয়েছে। ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এমন অভিযোগ আনা হতে পারে।”
ঘটনার পর দুপুরে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে কর্মকর্তারা তাকে আশ্বস্ত করেন যে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় ৩টা ১০ মিনিটে অনিয়মের অভিযোগ জানাতে সিনেট ভবনের নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে যান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী মো. আবিদুল ইসলাম খান।
নির্বাচন চলাকালীন এ ধরনের ঘটনা ভোটের পরিবেশকে প্রভাবিত করছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, যেকোনো অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত হবে এবং নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠুতা নিশ্চিত করা হবে।