দীর্ঘ ৩৩ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’। গত ১১ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদসহ মোট ২৫টির মধ্যে ২০টি পদে বিজয় লাভ করেছে সংগঠনটি।
১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাহাঙ্গীরনগরে প্রকাশ্য রাজনীতিতে শিবিরের অবস্থান দুর্বল ছিল। নব্বই দশকের শুরু থেকে কার্যত নিষিদ্ধ থাকার পরও তারা গোপনে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে গেছে। ‘কেজা’ বা ‘কেন্দ্র জানে’ নামে কোড ব্যবহার করে কার্যক্রম পরিচালনার কথা সাবেক নেতাদের এক ফেসবুক পোস্টে উঠে আসে। নিরাপত্তার কারণে প্রতিটি হল ও ইউনিটের আলাদা কোড থাকত, যাতে একজন ধরা পড়লেও অন্যদের তথ্য ফাঁস না হয়।
শিবিরের বর্তমান কর্মীরা জানান, প্রকাশ্যে রাজনীতি বন্ধ থাকলেও আন্ডারগ্রাউন্ড কাঠামোর মাধ্যমে সংগঠন টিকে ছিল। জাকসুতে এই বিজয়কে তারা রাজনৈতিক সহাবস্থানের নতুন সূচনা হিসেবে দেখছেন।
ভিপি প্রার্থী আরিফুল্লাহ আদিব নির্বাচনের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর এমন এক জায়গা, যেখানে শিবিরকর্মীদের জীবন দিতে হয়েছে। ১৯৯৪ সালে ভর্তি পরীক্ষার ভাইভায় অংশ নিতে এসে আমাদের ভাই কামরুল ইসলাম শুধুমাত্র শিবির সন্দেহে পিটিয়ে নিহত হন। শেখ হাসিনার শাসনামলেও অনেক কর্মী গুলি খেয়ে পঙ্গু হয়েছেন। তবুও এত বাধা, নির্যাতন আর শোকের মধ্যেও আমরা পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিয়েছি এবং বিজয়ী হয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “এ বিজয় আমাদের ত্যাগের ফসল এবং শিক্ষার্থীদের আস্থার প্রতিফলন।”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের এই জয়ে শিক্ষাঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।