বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় বিএনপি নেতা পরিচয়ধারী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এক কলেজছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় এ মামলা করেন। পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার প্রধান আসামি মাসুদ সরদার ওরফে ‘কিং মাসুদ’, গৌরনদীর খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মোসলেম সরদারের ছেলে। তিনি নিজেকে ইতালি প্রবাসী বিএনপি নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন এবং এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য রাজনৈতিক ব্যানার-পোস্টারও ব্যবহার করতেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
ঘটনার বিবরণ
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী মাদারীপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র (১৭)। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধান আসামি কিং মাসুদ প্রথমে ফেসবুক মেসেঞ্জারে ওই ছাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরবর্তীতে ছাত্রটির সহপাঠী ইমন সরদার (লোকমান সরদারের ছেলে, কমলাপুর গ্রাম) এর মাধ্যমে তাকে সমরসিংহ বাজারে ডেকে নেয়।
সেখান থেকে ইমন ছাত্রটিকে ভ্যানযোগে ইল্লা বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যায়। পরে কিং মাসুদ, ইমন এবং আরেক সহযোগী নিলয় আহমেদ (সামসুল হক ফকিরের ছেলে, খাঞ্জাপুর গ্রাম) মিলে ওই ছাত্রকে নিলয়ের বাড়িতে নিয়ে যায়।
এজাহারে বলা হয়, সেখানে নিলয় ও ইমন বাইরে চলে গেলে কিং মাসুদ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে কলেজছাত্রকে বিবস্ত্র করে জোরপূর্বক বলাৎকার করেন। এরপর কাউকে বিষয়টি জানালে প্রাণনাশের হুমকি দেন এবং ভ্যানযোগে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়লে ভুক্তভোগী ঘটনাটি পরিবারকে জানায়। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশের অবস্থান
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম জানান,
“ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রধান আসামি কিং মাসুদকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। ইতিমধ্যে সহযোগী আসামি নিলয় আহমেদকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর ইতালি থেকে দেশে ফিরে নিজেকে বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে এলাকায় সক্রিয় হন মাসুদ সরদার। তবে ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।
পুলিশ বলছে, ঘটনাটি সংবেদনশীল হওয়ায় তদন্তে গোপনীয়তা বজায় রেখে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।