বিশ্বজুড়ে দ্রুত বাড়ছে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD), যা বর্তমানে এক ধরনের ‘নিরব মহামারিতে’ পরিণত হচ্ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, অনিয়মিত জীবনধারা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং দৈনন্দিন শারীরিক ক্রিয়ার অভাব—এই তিনটি কারণ মিলেই এই রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
লিভারে অল্প পরিমাণ চর্বি থাকা স্বাভাবিক। তবে চর্বির পরিমাণ অতিরিক্ত হলে লিভারের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত হয়। চিকিৎসা না করলে এটি সিরোসিস বা লিভার ক্যানসারে রূপ নিতে পারে।
ফ্যাটি লিভারের দুই ধরনের:
১. অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার: অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে হয়।
২. নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার (NAFLD): অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস, চর্বিযুক্ত খাবার এবং অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে ঘটে।
প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ সাধারণত কোনো লক্ষণ দেখায় না। তবে ধীরে ধীরে কিছু সতর্ক সংকেত দেখা দিতে পারে:
পেটের ডান পাশে চাপ বা অস্বস্তি
অতিরিক্ত ক্লান্তি
হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া
পেটে বা পায়ে ফোলাভাব
চোখ ও ত্বকে হলুদ ভাব (জন্ডিস)
গাঢ় প্রস্রাব ও হালকা বর্ণের মল
মাঝে মাঝে মানসিক বিভ্রান্তি
ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা (NHS) জানিয়েছে, পায়ে ফোলাভাব ফ্যাটি লিভারের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। অনেকে ভাবেন এটি শুধু দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার কারণে হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, এটি লিভারের ক্ষতির প্রাথমিক ইঙ্গিত হতে পারে।
ফোলাভাব পরীক্ষা করবেন যেভাবে:
ফুলে যাওয়া অংশে আঙুল দিয়ে কয়েক সেকেন্ড চাপ দিন। আঙুল তুলে দিলে যদি সেখানে গর্তের মতো দাগ থেকে যায়, এটি ‘পিটিং এডেমা’, যা শরীরে তরল জমার লক্ষণ।
পায়ে বা পেটে এমন অস্বাভাবিক ফোলাভাব দেখলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সময়মতো পরীক্ষা ও চিকিৎসা শুরু করলে ফ্যাটি লিভার থেকেও পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব।
প্রতিরোধের জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
1. প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করুন
2. সুষম ও পরিমিত খাবার খান
3. অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন
4. শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
উল্লেখ্য, কোনো উপসর্গ না দেখা গেলেও লিভার দীর্ঘ সময় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই শরীরের এমন অস্বাভাবিক পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিন। সামান্য ফোলাভাবও বড় বিপদের পূর্বাভাস হতে পারে।
