ভারতে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির উত্থান ইসরাইলের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক গভীর করে তোলে। ইসরাইলের মতো সম্প্রসারণবাদী ও বর্ণবাদী নীতি এখন ভারতের নিরাপত্তা কৌশলের অংশ হয়ে উঠেছে। ইসরাইল যেভাবে ফিলিস্তিন ছাড়াও সিরিয়া, লেবাননসহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে সামরিক শক্তি প্রদর্শন করে ভয় দেখিয়ে থাকে, ভারত ঠিক একই কৌশল গ্রহণ করেছে।
ইসরাইলের ধর্মীয় উগ্রপন্থি দলগুলো যেমন আশপাশের দেশগুলো দখল করে বৃহত্তর ইসরাইল রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখে, ঠিক একইভাবে ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোও তাদের স্বপ্নের ‘অখণ্ড ভারত’ গঠনের জন্য আফগানিস্তান থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত সব দেশ দখল করার স্বপ্ন দেখে।
সম্প্রতি পাকিস্তানে সামরিক অভিযান এই কৌশলের অংশ ছিল। এই অভিযানে মসজিদ, মাদরাসা ও আবাসিক এলাকাকে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়। ইসরাইলের মতো ভারত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এমন সব স্থাপনাকে বেছে নিয়েছিল, যাতে সাধারণ মানুষের মনে ভারত সম্পর্কে এক ধরনের ভীতি তৈরি হয়। ইসরাইলি সম্প্রসারণবাদী কৌশলের প্রতিফলন ছিল এবারের ‘অপারেশন সিঁদুর’র পরিকল্পনায়।
ভারতের পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো পর্যন্ত এই অভিযানে সমর্থন দেয়নি। কারণ ভারতের দিক থেকে পেহেলগামে সশস্ত্র হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ ছিল না। কিন্তু একটি মাত্র দেশ ভারতকে সমর্থন দিয়েছে, সেটি হলো ইসরাইল।
ইহুদিবাদী রাজনৈতিক দর্শনের সঙ্গে রয়েছে হিন্দুত্ববাদীদের মিল। ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকারের অভ্যন্তরীণ নীতিতে আমরা এর প্রতিফলন দেখতে পাই। ইসরাইল গাজা উপত্যকা ও অধিকৃত পশ্চিমতীরে ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর যেভাবে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে, একইভাবে ভারত সরকার আইনের সমতা, উন্নয়ন ও আধুনিকতার নামে দেশটিতে মুসলমানদের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মসজিদ-মাদরাসা গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। ইসরাইলি ইহুদিবাদী মডেল অনুসরণ করে ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা দেশটিতে মুসলিম নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার সমর্থক যে কটি দেশ আছে, তার মধ্যে ভারত অন্যতম। এমনকি ভারত ইসরাইলের গাজা অভিযানে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, বোমা তৈরির উপাদান ও অন্যান্য সমরাস্ত্র দিয়ে সহায়তা করেছে। ইসরাইলের ওপর আন্তর্জাতিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাবকেও সমর্থন করেনি ভারত। ভারতের ১২ হাজারের বেশি শ্রমিক গিয়ে ইসরাইলে কাজ করছে ফিলিস্তিনি শ্রমিকদের পরিবর্তে। ভবিষ্যতে ইসরাইল ভারতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর সমরাস্ত্র কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনাও করছে।
ভারত গত দশকে ইসরাইল থেকে ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সামরিক হার্ডওয়্যার আমদানি করেছে, যার মধ্যে রয়েছে রাডার, নজরদারি এবং যুদ্ধ ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ভারত বিশ্বের বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক। ২০১২ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ৩৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র কিনেছে। এর মধ্যে ইসরাইল ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম সামরিক হার্ডওয়্যার সরবরাহকারী দেশ। গত দশকে রাশিয়া থেকে ভারত ২১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার, ফ্রান্স থেকে ৫ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র কিনেছে। এরপর ইসরাইলের স্থান।
ইসরাইলের এলবিট সিস্টেমস ভারতীয় আদানি গ্রুপের সঙ্গে হায়দ্রাবাদে হার্মিস ৯০০ ড্রোন তৈরি করে। এবারের পাক-ভারত যুদ্ধ এবং গাজায় ইসরাইলি হামলায় এসব ড্রোন ব্যবহার করা হয়। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইসরাইল থেকে রপ্তানি করা অস্ত্রের প্রায় ৪২ দশমিক ১ শতাংশ এসেছে ভারতে। অর্থাৎ সামরিক খাত থেকে ইসরাইলের আয়ের অন্যতম উৎস হলো ভারত।
ভারতের উগ্রপন্থি জনগণের মধ্যে ইসরাইলের জনপ্রিয়তা কতটা, তার প্রমাণ পাওয়া যায় ভারতে নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত নাওর গিলনের একটি মন্তব্য থেকে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলার পর তিনি বলেন, “সবাই আমাকে বলছে, ‘আমি স্বেচ্ছাসেবক হতে চাই, আমি ইসরাইলের জন্য লড়াই করতে চাই’। তিনি দাবি করেন, ভারতীয়দের কাছ থেকে এতটাই সাড়া পাওয়া গেছে যে তিনি শুধু ভারতীয়দের নিয়ে আরেকটি ইসরাইলি সেনাবাহিনী গঠন করতে পারেন।’
৬ জুন, গাজার নুসাইরাত শরণার্থীশিবিরে জাতিসংঘের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরাইলের বোমা হামলার পর, কুদস নিউজ নেটওয়ার্ক ইসরাইলি যুদ্ধবিমান কর্তৃক নিক্ষিপ্ত একটি ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষের একটি ভিডিও প্রকাশ করে। জট পাকানো অংশগুলোর মধ্যে একটি লেবেল স্পষ্টভাবে লেখা ছিল : ‘ভারতে তৈরি।’
নেতানিয়াহু এবং মোদির অধীনে ইসরাইল এবং ভারত শুধু কৌশলগত অংশীদারই নয়। তারা ক্রমেই আদর্শিক মিত্র হয়ে উঠছে, জাতিগত-জাতীয়তাবাদের সমান্তরাল পথ অনুসরণ করছে।
গত পাঁচ বছরে উভয় দেশ যৌথ সামরিক মহড়া পরিচালনা করেছে এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ এবং বিনিময় সফর আয়োজন করেছে। অথচ ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে ইসরাইলের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। কৌশলগত মিত্রতার অংশ হিসেবে এই সম্পর্ক খুব দ্রুত গড়ে উঠেছে।
তবে ভারতের সঙ্গে ইসরাইলের আদর্শিক সম্পর্কের ভিত্তিতে সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক বেশ পুরোনো। কংগ্রেস ও বিজেপি উভয় দলই এ সম্পর্ক রক্ষা করে চলেছে।
১৯৬২ এবং ১৯৬৫ সালে চীন ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরাইল ভারতকে অস্ত্র সরবরাহ করে। ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ইসরাইলের অস্ত্র সরবরাহের বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যায়। ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে কারগিল যুদ্ধে ভারতকে জরুরি সহায়তা প্রদান করে, যা ইসরাইলকে একটি নির্ভরযোগ্য সামরিক অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
সামরিক, আদর্শিক এবং পদ্ধতিগতভাবে ইসরাইল হয়ে উঠেছে ভারতের মডেল রাষ্ট্র। অধিকৃত কাশ্মীরে, ইসরাইলি ধাঁচের কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। সীমান্তে বেড়া, ড্রোন, নজরদারি ব্যবস্থা এবং তথাকথিত ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ ইসরাইলি মডেলের অংশ। ২০১৯ সালে অধিকৃত কাশ্মীরের সীমিত স্বায়ত্তশাসন বাতিলের পর, একজন ভারতীয় কূটনীতিক খোলাখুলিভাবে এ অঞ্চলে ইসরাইলি ধাঁচের বসতি স্থাপনের পক্ষে কথা বলেছেন। অর্থাৎ কাশ্মীরের জনবিন্যাস বদলে দেওয়ার আইডিয়া ভারত ইসরাইল থেকে গ্রহণ করেছে।
ভারতীয়দের মধ্যে একটি মিথ আছে ইসরাইলি সমরাস্ত্র প্রযুক্তির মাধ্যমে তারা পাকিস্তানকে পরাজিত করতে পারবে। এমনকি চীনের ওপর আধিপত্য বজায় রাখতে পারবে। শুধু সাধারণ ভারতীয় নয়, দেশটির উগ্রপন্থি নীতিনির্ধারকদের মধ্যেও এমন ভাবনা কাজ করে। তারা ভুলে যায়, ভারত ও ইসরাইল রাষ্ট্র এক নয়।
ইসরাইল পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রের একটি কলোনি। যেটি রক্ষার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর। ইসরাইলের প্রতিবেশী আরব দেশগুলোও তাদের নিরাপত্তা ও তেল-বাণিজ্য ও উত্তোলনে পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। এরপরও আরব–ইসরাইল যুদ্ধে ইসরাইল যখন পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে, তখন মার্কিন সামরিক সাহায্য নিয়ে ইসরাইল বিজয়ী হয়েছে। ফলে আরবরা বোঝে ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধের অর্থ হলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ করা।
অন্যদিকে ভারত পশ্চিমা দেশগুলোর মতো কোনো কলোনি নয়। পাক-ভারত যুদ্ধ কিংবা ভারত-চীন যুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো ইসরাইলের মতো ভারতের পাশে কখনোই দাঁড়াবে না। এবারের যুদ্ধেও তা প্রমাণ হয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের বন্ধু চীন ও তুরস্কের সামরিক সক্ষমতা ইসরাইলের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। এই যুদ্ধে প্রযুক্তি ব্যবহারের যে বিবরণ এসেছে, তা সমর-বিশারদদের হতবাক করে দিয়েছে। তুরস্কের জ্যামিং সিস্টেমের মাধ্যমে একের পর এক ইসরাইলি ড্রোন ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান।
অনেক সামরিক বিশ্লেষক এমন অভিমত দিয়েছেন, চীনা আকাশ প্রযুক্তির বিস্ময়কর অগ্রগতি আড়াল করতেই যুক্তরাষ্ট্র তড়িঘড়ি করে পাকিস্তানের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য। অবিলম্বে এ যুদ্ধ বন্ধ করা না হলে সমরাস্ত্র প্রযুক্তির ক্ষেত্রে চীনের অগ্রগতি আর চীনা অস্ত্রের কার্যকারিতা প্রকাশ হয়ে পড়ত বিশ্ববাসীর সামনে। এর ফলে চীনা অস্ত্রের বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইসরাইলসহ পশ্চিমা অস্ত্র ও প্রযুক্তি যে এখন অকার্যকর হয়ে পড়েছে, তাও জেনে যেত বিশ্ব। এতে করে বিশ্বের সমরাস্ত্র বাজারে দীর্ঘকাল ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর একচ্ছত্র আধিপত্যের ওপর প্রভাব পড়ত।
ইতোমধ্যে চীনা যুদ্ধবিমান, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এবং পিএল-১৫ মিসাইলের যে সাফল্য দেখিয়েছে পাকিস্তান, তাতেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে পশ্চিমা প্রযুক্তি ও যুদ্ধকৌশল। পাকিস্তান যুদ্ধ করছিল চীন এবং তাদের নিজস্ব তৈরি অস্ত্র নিয়ে। সঙ্গে ছিল তুরস্কের অস্ত্র প্রযুক্তি। এসব অস্ত্র নিয়ে পাকিস্তান যখন মাত্র পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে ভারতকে সম্পূর্ণ ধরাশায়ী করে।
১০ মে আকস্মিক যুদ্ধবিরতির কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এমন তথ্য এসেছে, যা অবাক করার মতো। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা জানতে পারে এ যুদ্ধে দ্রুত প্রবেশ করতে যাচ্ছে চীন। পাকিস্তানকে সামনে রেখে ভারতকে চূড়ান্তরূপে শায়েস্তা করতে চেয়েছিল চীন। এ জন্য পাকিস্তানকে যাবতীয় সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে বেইজিং। যুক্তরাষ্ট্র বুঝতে পারে এ যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানকে সামনে রেখে অনেক গোপন অস্ত্রের পরীক্ষা চালাবে চীন।
ভারতের বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধীর বক্তব্যে এমন আভাস পাওয়া যায়, তিনি অভিযোগ করেন তার দেশ এমন কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, যাতে চীন ও পাকিস্তান আরো বেশি ঘনিষ্ঠ হয়েছে। অথচ ভারতের কৌশল হওয়া উচিত ছিল দুদেশের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করা। সিএনএনের খবরে বলা হয়, যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রথম অনুরোধ করে ভারত। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, যুদ্ধবিরতির জন্য সৌদি আরব, ইরান, তুরস্কসহ আরো বিভিন্ন দেশের দ্বারস্থ হয়েছিল নয়াদিল্লি।
ইসরাইলের অনুসরণে ভারত অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে নানা মিস অ্যাডভেঞ্চারে জড়িয়ে পড়ছে। পাকিস্তানে আক্রমণ ছিল এমন একটি মিস অ্যাডভেঞ্চার। এর আগে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থার মতো যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় সে দেশের নাগরিকদের হত্যা করছে, যা পশ্চিমা বিশ্বকে ক্ষুব্ধ করে তোলে।
ইসরাইলকে পশ্চিমা দেশগুলো যে ধরনের কৌশলগত সমর্থন দিয়ে থাকে, একই ধরনের সমর্থন ভারতকে দেবে, তা ভুল চিন্তা। ভারতের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলো বুঝতে পারছে, বাস্তবতার চেয়ে দেশটির নীতিনির্ধারকরা উগ্রপন্থি উর্বর চিন্তায় আচ্ছন্ন। দেশটির সামরিক ও কৌশলগত সক্ষমতা অনেক দুর্বল। যুদ্ধবিরতিতে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ, কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতার প্রস্তাব তার প্রমাণ। ইসরাইলকে অনুসরণের এই নীতির কারণে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভারতের প্রভাব আগামী দিনে আরো দুর্বল হয়ে পড়বে।
লেখক : সহযোগী সম্পাদক