অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে দুই ছাত্র প্রতিনিধি আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম পদত্যাগ করায় তিনটি মন্ত্রণালয় এখন কার্যত শূন্য। ফলে এই মন্ত্রণালয়গুলোতে কি নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হবে, নাকি বর্তমান উপদেষ্টাদের মধ্যেই দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করা হবে এ নিয়ে নানা আলোচনা চলছে।
নিয়ম অনুযায়ী, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগপত্র গ্রহণ করলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করবে। এরপর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো প্রধান উপদেষ্টার অধীনে থাকবে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধান উপদেষ্টা চাইলে এই শূন্য পদে নতুন কাউকে নিয়োগ দিতে পারেন, অথবা বিদ্যমান উপদেষ্টাদের মধ্যেই অতিরিক্ত দায়িত্ব বণ্টন করতে পারেন। চাইলে এসব মন্ত্রণালয় সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার অধীনে রাখাও সম্ভব।
সরকারের বিভিন্ন সূত্র বলছে, তফসিল ঘোষণার পর নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ দিলে সমালোচনা হতে পারে। তাই শেষ মুহূর্তে নতুন কাউকে না এনে পুরোনো উপদেষ্টাদের মাঝেই তিন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হতে পারে।
এদিকে সম্ভাব্য দায়িত্ব বণ্টন নিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছে চারজন উপদেষ্টার নাম।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, শ্রম উপদেষ্টা, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারেন।
আদিলুর রহমান খান, যিনি বর্তমানে শিল্প ও গৃহায়ণ-গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন, তাকেও স্থানীয় সরকারের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়ার কথা আলোচনা চলছে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বর্তমান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা, তথ্য ও সম্প্রচার এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, তাকেও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে।
উল্লেখ্য, আসিফ মাহমুদ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। অন্যদিকে মাহফুজ আলম ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।
জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। ২৩ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদে এরই মধ্যে দুই ছাত্র প্রতিনিধি সরে দাঁড়ালেন। এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আরেক ছাত্র উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করে এনসিপির আহ্বায়ক হন।
মাহফুজ আলম প্রথমে গত বছরের ২৮ আগস্ট বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পান এবং পরে ১০ নভেম্বর উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন। এরপর নাহিদ ইসলামের পদত্যাগের পর তিনি তথ্য উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
অন্যদিকে আসিফ মাহমুদ প্রথমে শ্রম ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। গত বছরের নভেম্বরে প্রয়াত এ এফ হাসান আরিফের স্থলে তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান এবং এরপর থেকে স্থানীয় সরকার ও যুব ও ক্রীড়ার দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন।







