ঢাকায় আওয়ামীপন্থি প্রকাশকদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছে ভারতের একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে ৬ আগস্ট দুদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ওই বৈঠক আয়োজন করে দিল্লিভিত্তিক কোম্পানি ‘এএসএপি গ্লোবাল ই-বুকস প্রাইভেট লিমিটেড’। বৈঠকের শিরোনাম ছিল “কোলাবরেট অন ই-বুক রাইটস”। এতে কেবল আওয়ামী ঘরানার বা তাদের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন প্রকাশককেই আমন্ত্রণ জানানো হয় বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সাধারণ প্রকাশকদের অগোচরে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। অথচ ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর যেসব প্রকাশক আড়ালে চলে গিয়েছিলেন, তাদের অনেককে এই সভায় দেখা গেছে। এ কারণে বৈঠকটিকে ঘিরে প্রকাশক মহলে নানা গুঞ্জন ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
প্রথম দিনে ৩৪ জন প্রকাশক অংশ নেন, পরদিন আরো কয়েকজন যোগ দেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন অন্যপ্রকাশের মাজহারুল ইসলাম, সময় প্রকাশনের ফরিদ আহমেদ, অনুপম প্রকাশনীর মিলন কান্তি নাথ, কথাপ্রকাশের জসিম উদ্দিন, চারুলিপির হুমায়ুন কবীর, কাকলী প্রকাশনীর নাছির আহমেদ সেলিম, বিশ্বসাহিত্য ভবনের তোফাজ্জল হোসেন, জাতীয় সাহিত্য প্রকাশের কমলকান্তি দাস, মাওলা ব্রাদার্সের ফারুকসহ আরও অনেকে।
অনেক প্রকাশক অভিযোগ করেন, আওয়ামী সরকারের আমলে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার নামে বিপুল সংখ্যক বই প্রকাশ করে কিছু প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বিপুল মুনাফা করেছে। ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর গা-ঢাকা দেওয়া ওইসব প্রকাশকদের হঠাৎ ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠকে দেখা যাওয়ায় নতুন ষড়যন্ত্রের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি সাঈদ বারী প্রশ্ন তোলেন—ভারত যখন বাংলাদেশিদের প্রতি বৈরী আচরণ করছে, তখন তাদের প্রতিষ্ঠান কেন শুধু আওয়ামীপন্থি প্রকাশকদের নিয়ে গোপন বৈঠক করল? তিনি সরকারের কাছে এ বিষয়ে তদন্তের দাবি জানান।
অংশগ্রহণকারীদের কেউ কেউ অবশ্য দাবি করেছেন, এটি কেবল ই-বুক বিক্রিবিষয়ক ব্যবসায়িক মিটিং, এর বাইরে অন্য কোনো উদ্দেশ্য তাদের জানা নেই। তবে অনেক প্রকাশক মনে করছেন, বৈঠকটি সময় ও প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সন্দেহজনক এবং এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে।