মেজর সাদিক, তার স্ত্রী সুমাইয়া এবং অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট গুলশান আরাকে ঘিরে চলমান মামলাটি প্রথমে সহজ মনে হলেও, তদন্তে বেরিয়ে এসেছে জটিল ও ভয়াবহ নাশকতার পরিকল্পনা। যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেল (ডিজিএফআই, এনএসআই, এসবি ও ডিবি সমন্বিত) নিশ্চিত করেছে— এই চক্রের প্রকৃত পরিকল্পনা ছিল অত্যন্ত বিপজ্জনক ও কার্যকর।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রান্তের নেতাকর্মীদের “সাব টেক্টিক্যাল আর্বান ওয়ারফেয়ার” বা গেরিলা কৌশলভিত্তিক প্রশিক্ষণ দিয়েছিল এই চক্র। তাদের লক্ষ্য ছিল ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা— বিশেষ করে কয়েকটি বিদেশি দূতাবাস, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, সিএমএইচ, পপুলার হাসপাতাল, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়সহ হাই ভ্যালু টার্গেট ধ্বংস করা।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, এসব হামলার মাধ্যমে অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে দেশে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট, এবং চলমান আন্তর্জাতিক তদন্ত ব্যাহত করার চেষ্টা করা হতো। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলার পরিকল্পনাও ছিল, যাতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি আন্তর্জাতিকভাবে উত্থাপিত হয়ে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি হয়।
তদন্তে আরও বেরিয়ে এসেছে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রত্যক্ষ সহায়তায় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছিল এবং প্রয়োজনে সীমান্তে ২-৩ দিনের সীমিত বিমান হামলার প্রস্তুতিও ছিল। তবে প্রধান দুই মাস্টারমাইন্ড মেজর সাদিক ও সুমাইয়া এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৪০ জনের বেশি সদস্য গ্রেপ্তার হওয়ায় পুরো পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, ডিবির দ্রুত পদক্ষেপ ও যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেলের সমন্বিত অভিযানের মাধ্যমেই এই নাশকতা রোধ করা সম্ভব হয়েছে।